দুঃসময়ে ধান ডুবিয়ে নৌকায় চড়লেন আজাদ!
অনলাইন ডেস্কঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। চিন্তা-চেতনায় বিএনপির একজন পাকাপোক্ত নেতা হলেও তার হাতেই নৌকার বৈঠা তুলে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নীতিনির্ধারকরা।
আবুল কালাম আজাদকে মনোনয়নের খবর প্রকাশ হলে বিএনপি নেতারা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকে মনোনয়নের খবরের পর থেকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীসহ সমর্থকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুরো জেলাতে বিষয়টি নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কি এতোটাই জনবিছিন্ন আর অজনপ্রিয় যে, বিএনপি নেতাকে ডেকে এনে নৌকার মনোনয়ন দিতে হচ্ছে? যদি তা না হয় তবে কার স্বার্থে, কিসের লোভে বিএনপি নেতার হাতে তুলে দেওয়া হলো নৌকার বৈঠা?
এমন পরিস্থিতিতে ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদ্যপ্রয়াত আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মুরাদের স্ত্রী সামিনা সুলতানা। তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালনকালে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মারা যান সামিনার স্বামী মুরাদ।
নির্বাচনী প্রচারণায় সামিনা সুলতানাস্বামীর অবর্তমানে সামিনাসহ দলীয় অন্যান্যরা মনোনয়ন চেয়েও নীতিনির্ধারকদের আর্শীবাদ পাননি। পক্ষান্তরে নৌকা প্রতীক পেয়ে জেলাবাসীকে রাজনীতির তীক্ষ্ণ চাল ও চমক দেখিয়ে দেন বিএনপির সহ-সভাপতি আজাদ। নৌকা প্রতীক পেয়ে নিজস্ব লোকজন দিয়ে সুলতানা সমর্থিতদের নির্বাচনী প্রচারণায় ইতিমধ্যেই বাধা দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে হামলার অভিযোগ। হামলায় তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামের রবিন মিয়া, জেসমিন আক্তার, নিহার রঞ্জন, পাকগুয়া গ্রামের বাবুল মিয়া, বিনয় সরকার, সমীরন সরকার আহত হয়েছেন।
এসব বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে বাংলানিউজকে জানান সামিনা। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হলে জয় শতভাগ নিশ্চিত।
নিজে মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি থাকার কথা অকপটে স্বীকার করে নেন নৌকা প্রতীক পাওয়া আজাদ। তবে কীভাবে আর কার হাত ধরে বিএনপি থেকে নৌকার মনোনয়ন পেলেন জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজাদের বিরুদ্ধে সামিনার অভিযোগের কথা স্বীকার করে নেত্রকোনা জেলার নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞা জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল ধরনের প্রস্তুতি রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
সব ঠিকঠাক থাকলে বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। ওইদিন ৯টি কেন্দ্রে ৩৯টি কক্ষে চলবে ভোটগ্রহণ।
ইউনিয়নটিতে সবমিলিয়ে ভোটার রয়েছেন ১৩ হাজার ৭৯৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটের সংখ্যা ৬৭৯৭ টি ও পুরুষ ভোটের সংখ্যা ৬৯৯৭ টি।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী জানান, নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা মাঠে থাকবেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। (সূত্রঃ বাংলানিউজ২৪.কম)
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৮ মার্চ