শাকিবের পারিশ্রমিক বেশি জিৎ, দেবের চেয়েও : জয়দীপ মুখার্জি
অনলাইন ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে শাকিবের অবস্থান নিয়ে এমন মন্তব্য আর কারো নয়, পরিচালক জয়দীপ মুখার্জির। যিনি শাকিব খানের হিট ছবি ‘শিকারী’ ও ‘নবাব’র নির্মাতা।
সম্প্রতি টলিউড ম্যাগাজিনের ইউটিউবে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়দীপ মুখার্জি বলেন, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগরের শাকিব খান স্টেজ শো করেছে। ওখানে জিৎ, দেবের চেয়েও শাকিব বেশি পারিশ্রমিক নিয়ে স্টেজ শো করেছে। এটা কিন্তু চারটে খানি কথা নয়!
কলকাতায় পরিচিতি পেলেও সেখানকার গণমাধ্যম ও মিডিয়ায় শাকিবের উপস্থিতি কম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জয়দীপ মুখার্জি বলেন, শাকিবের সঙ্গে কথা বলে আমি জেনেছি, সে বাংলাদেশে বছরে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি ছবি করে। এটা তার কমিটমেন্ট। বাংলাদেশে তিনশো’র মতো হল রয়েছে, এরমধ্যে কিছু হল অনেক সময় বন্ধ থাকে। শাকিব যদি ছবি না করে ওখানকার (বাংলাদেশ) হলগুলো মার খাবে।
‘‘বাংলাদেশের হল মালিক, প্রযোজকদের জন্য সে প্রচণ্ড কমিটেড থাকে, যাতে তারা বাঁচে। প্রতিটি দিনই সে ব্যস্ত থাকে, শুটিং নিয়ে। কলকাতা থেকে ২১ মার্চ বাংলাদেশে ফিরে ওইদিনই নতুন একটা ছবির শুটিং শুরু করেছে। শাকিব যদি বাংলাদেশে বছরে ছয়টি ছবি না করে, তবে ওখানে যে হলগুলো চালু আছে, সবগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ শাকিব ছাড়া আর তেমন কোনো হিরোর ছবি চলে না! বছরে ওখানে আরো দু-একটা ছবি যেমন; ‘আয়নাবাজি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ হিট করেছে। কিন্তু ওগুলোর কোনো কনসিসটেন্সি (ধারাবাহিকতা) নেই।”
জয়দীপ মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশে শাকিবের জনপ্রিয়তা রজনীকান্তের মতো। ভারতে অনেক বড় বড় হিরো আসছে। যার মধ্যে অমিতাভ বচ্চন একজন। আমি নিজেও অমিতাভ বচ্চনের ফ্যান। কিন্তু রজনীকান্তের সিনেমা মুক্তি পেলে যে একটা উন্মাদনা তৈরি হয় ভারতে। সেটা অন্য কোনো নায়কের ক্ষেত্রে হয় না। একই ব্যাপারটা আমি দেখতে পাই শাকিবের মধ্যে। বাংলাদেশে শাকিবের ছবি মুক্তি মানে দুই সপ্তাহে হল মালিকরা টাকা তুলে নেবে। শাকিবের ছবি মেরিট কেমন, সে ছবি ভালো না খারাপ সেটা দেখার আগে সেখানে দুই সপ্তাহ চলে। হাউজ ফুলও থাকে।
শাকিব আমাকে এও বলেছে, লাস্ট ১০ বছর ধরে সে বেছে বেছে ছবি করবে। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পেরে ওঠে না।’
ওই সাক্ষাৎকারে প্রভাবশালী এ পরিচালক আরো বলেন, সবগুলো ছবিই যে ভালো হচ্ছে না, সেটা সেও (শাকিব) স্বীকার করে। কিন্তু ওকে করতে হয় বলেই করে। সেই কারণে শাকিব কলকাতায় বেশি সময় দিতে পারে না। দেখা গেল আমার ছবির ডাবিং থাকলে শাকিব দু’দিনের জন্য কলকাতায় এসেই আবার কাজ শেষ করে দেশে ফিরে যায়। সেই কারণে এখানকার মিডিয়ার সঙ্গে শাকিবের যোগাযোগটা এখনও ভালোমতো তৈরি হয়নি। তবে আমি শাকিবকে বলেছি, কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে তোমার একটু একটু করে স্থান তৈরি হচ্ছে, ফ্যান বাড়ছে তাই এখনাকার মিডিয়ায় তার একটু সময় দেয়া উচিত।
চালবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে এ পরিচালকের সাথে শাকিব খানের হ্যাটট্রিক হলো। এবার আসছে ‘ভাইজান এলো রে’।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরিচালক জয়দীপ বলেন, এই ব্যাপার নিয়ে আমি মজা করেই বলি, এটা হচ্ছে মনমোহন দেশাই ও অমিতাভ বচ্চনের মতো একটা জুটি! শাকিবের সাথে কাজ করতে আমি খুব উপভোগ করি। আমার মনে হয় শাকিবও সেটা করে। ‘শিকারী’র পর থেকে আমাদের যে রসায়ন শুরু হয়েছে সেটা এখন একটা সুন্দর আকার ধারণ করেছে।
প্রশ্ন ছিল, টলিউডে কি অভিনেতা কম পড়েছে? সে কারণে শাকিবের সাথে এতো সিনেমা?
উত্তরে জয়দীপের সরল স্বীকারোক্তি, ‘শিকারী’ করার পর শাকিবকে আমি যে ধরনের অভিনেতা হিসেবে পেলাম; যখন ‘নবাব’ এলো, তখন শাকিবকে ছাড়া আমার অন্য কারো কথা মনে পড়েনি। কারণ বাণিজ্যিক ছবিতে ওই চরিত্রকে শাকিব ছাড়া ওইভাবে ফুটিতে তোলার মতো আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অন্য কেউ আছে?