সাগরে আবারো ট্রলারে ডাকাতি, ৭ জেলে আহত
দীর্ঘদিন পর ফের সাগরে জলদস্যূরা বেপরোয়া হয়ে পরেছে। গত একমাসে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রায় ৮ থেকে দশটির মতো জেলে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে তিন জেলের মৃত্যু এবং তিন জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শনিবার বেলা বারোটার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে গভীরে পাথরঘাটার তিন বাদশাহ মালিকানাধীন এফবি ভাই ভাই ট্রলারের আট জেলেকে জিম্মি করে মারধর করে মাছ, জাল-দড়ি, তেল, মটর, সেলফ, বেটারিসহ ঘন্যান্য রসদ সামগ্রীর মধ্যে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় জলদস্যুর মারধরে ৭ জেলে আহত হয়েছেন।
রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিচ্ছিন্ন ভাবে এরকম বারবার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় উপকূলীয় জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কয়েক দিনে আগে জলদস্যুর হামলায় জেলে মারা যাওয়ার ঘটনায় আবার অনেকে এই পেশা ছেরে দেয়ার চিন্তা করছেন বলেও জানা গেছে।
আহত জেলেরা হলো, মাঝি আমির হোসেন, সাহাবুদ্দিন, লিটন, হাসান, জাহাঙ্গীর, হোসেন আলী ও আবদুল্লাহ।
এফবি ভাই ভাই ট্রলারের মালিক তিন বাদশাহ জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে করে ঘাটে ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হলে অন্য দুটি ট্রলারের সহযোগিতায় মেরামতের জন্য কক্সবাজার ঘাটের দিকে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার সময় কক্সবাজার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে হঠাৎ দুটি ট্রলার পেছন থেকে ধাওয়া করে তার এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি আটক করে। তখন সহযোগিতায় এগিয়ে আসা অন্য ট্রলার দুটি তার ট্রলারটি ছেড়ে দিয়ে নিরাপদে চলে যায়। এসময় ২৫ থেকে ৩০ জন ডাকাত দল তাদের ট্রলারে উঠে লাঠি ও পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং রামদা ও কুঠার দিয়ে কুপিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে সকল রসদ নিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। এতে ট্রলারের মাঝি আমির হোসেন, সাহাবুদ্দিন, লিটন, হাসান, জাহাঙ্গীর, হোসেন আলী ও আবদুল্লাহ গুরুতর আহত হয়।
এফবি ভাই ভাই ট্রলারের মাঝি আমির হোসেনের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ডাকাতরা এর আগেও আরো সাত টি ট্রলার ডাকাতি করে সাত মাঝিকে অপহরণ করে তাদের ট্রলারে উঠিযে ট্রলারসহ অপহরণ করতে চায়। কিন্তু ভাই ভাই ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হওয়ার আবার সাত জেলেকে ডাকাতদের ট্রলারে তুলে নিয়ে এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি ছেড়ে দেয়। জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজি জানান, বার বার বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার উপকূলীয় হাজারো জেলেরা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। যদি এদের থামানো না যায় তাহলে জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে নদীর ব্যাবসা ছেড়ে দেবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে দক্ষিণ জোন স্টেশন কোস্টগার্ড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট শাফায়াত আবরার জানান, বিষয়টি আমরা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি থেকে জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
র্যাব-৮ কোম্পানি কমান্ডার তুহিন রেজা জানান, কক্সবাজারের ঘটনাটি শুনেছি। যদিও ঘটনা আমার এলাকার না তবু বিস্তারিত জেনে তারপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।