পাথরঘাটা পৌরসভার খাজনা নিয়ে বিরোধ, ৩ দিন মুরগি বিক্রি বন্ধ
মুরগি ব্যবসায়ীদের সাথে পৌরসভার সাথে খাজনা নিয়ে বিরোধ থাকায় বরগুনার পাথরঘাটায় তিন দিন ধরে মুরগি বিক্রি বন্ধ রেখেছে ব্যাবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতা ও হোটেল ব্যাবসায়ীরা।
শনিবার দুপুরে পাথরঘাটা শহরের মুরগি বাজারে গিয়ে দেখা যায় দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছে ব্যাবসায়ীরা। এ সুযোগে গ্রাম থেকে আসা খুচরা বিক্রেতারা মুরগির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করেছে। তাও ঘন্টা খানেকের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বাজারে মুরগি আব্দুল মালেক কিনতে আসা আব্দুল মালেক জানান, বাড়িতে মেয়ে জামাই এসেছে। বাজারে এসেছিলাম কমদামে বয়লার মুরগি কিনতে। সেরাজুল ইসলাম জানান, আমি চাকরি করি, সপ্তাহিক ছুটির দিনে পুরো সপ্তাহের বাজার করি। আমার ছোট ছেলে মুরগির মাংস ছাড়া ভাত খেতে চায়না। দুদিন ধরে বাজারে এসেও মুরগি কিনতে পারিনি। আজকের অনেক অনুরোধ করছি তারপরও মুরগি বিক্রি করেনি ব্যাবসায়ীরা। হোটেল মোটেল জাকির হোসেন জানান, ক্রেতারা কম দামে খেতে মুরগির মাংস চায়। তিন দিন হোটেলে মুরগি রান্না হয়নি। এছাড়াও দাম বেশি হওয়ায় গরু বা খাশির মাংস হোটেলে চলে কম।
মুরগি ব্যাবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, জেলা পরিষদের নির্ধারিত হারে খাজনা পরিশোধ করে আসলেও পাথরঘাটা পৌরসভা থেকে মুরগীর ড্রেসিং এ বাড়তি তিন টাকা খাজনা নির্ধারণ করেছে যা দেশের কোথাও নেই। এ খাজনা না দেয়ায় কারনে মুরগি ড্রেসিং মেশিন পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়ে গেছে।
মুরগি ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম হোসেন জানান, ড্রেসিং এ মুরগি প্রতি বাড়তি তিন টাকা করে খাজনা ধার্জ করছে পৌরসভা। না দেয়ায় মেশিন তুলে নিয়ে গেছে। মুরগি ড্রেসিং করে না দিলে ক্রেতারা মুরগি কিনতে চায় না। তাই ড্রেসিংয়ের উপর খাজনা বাতিল সহ মেশিন ফেরত দেয়ার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে মুরগি বেচাবিক্রি বন্ধ রেখেছি। সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, তিন দিনের ধর্মঘটের কারণে প্রতিটি ব্যাবসায়ীর ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মুরগি মারা গেছে। পৌর পরিষদের খামখেয়ালীর কারনে এ ক্ষতি হচ্ছে তাদের।
ব্যাবসায়ি জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক জানান, গত তিনদিন মুরগি বিক্রি বন্ধ থাকায় আমার দশ হাজার টাকার মুরগি মারা গেছে। এনজিওর লোনের টাকায় ব্যাবসা করি। এতোগুলো টাকা আবার ধারদেনা করে পরিশোধ করতে হবে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, তারা পৌরসভার নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করছে না। পাশাপাশি খোলা জায়গায় মুরগি ড্রেসিং করে পরিবেশকে বিধ্বস্ত করছে। এ কারণে তাদের মেশিন জব্দ করা হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, পৌরসভার সাথে খাজানা বিষয়ে ঝামেলা রয়েছে। এটি পৌরসভার বিষয়। তারাই সমাধান করবে।