সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকনের জন্মদিন
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকনের জন্মদিন আজ। ১৯৮৫ সালের ১ মার্চ বরগুনার পাথরঘাটায় সম্ভ্রান্তু মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। সৃজনশীল লেখার অধিকারী শফিকুল ইসলাম খোকনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পাথরঘাটায়। খোকনের সাংবাদিকতার হাতেখড়ি মুক্তিযুদ্ধের মুখপত্র পত্রিকা দৈনিক দেশবাংলা থেকে।
বর্তমানে তিনি বহুল প্রচারিত জাতীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে ২০০১ সালে ড.ফেরদৌস আহমেদ কোরেয়েসি সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের মুখপত্র দৈনিক দেশবাংলা থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর থেকে এক সময়ে প্রভাবশালী দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক ডেসটিনি, দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক যায়যায়দিন, দৈনিক বর্তমান, দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন ছাড়াও একাধিক জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক, অনলাইন পোর্টাল, ইংরেজি দৈনিক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উসম্পাদকীয় লিখছেন। লিখছেন প্রবন্ধ, রচনা, ছড়া।
শফিকুল ইসলাম খোকন সাংবাদিকতা ছাড়াও গবেষনা করছেন স্থানীয় সরকার বিষয়ে ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে। ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষনাধর্মী লেখায় তৃতীয় স্থান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখায় চতুর্থ স্থান সম্মাননায় ভুষিত হন। তিনি ২০১০ সালে উপকূলীয় জনগোষ্ঠি অধিকার আদায়ে বিশেষ অবদান রাখায় উপকূলীয় সাংবাদিকতা সম্মাননা পুরস্কার ও ২০১১ সালে একই সম্মানায় ভুষিত হন। স¦াস্থ্য সাংবাদিকতা মিডিয়া ফেলোশিপ, শিশু অধিকার মিডিয়া ফেলোশিপ ও আধিবাসি ভূমি অধিকার মিডিয়া ফেলোশিপ অর্জন করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও স্থানীয় সরকার বিষয়, নারী, পর্যটনসহ সমসাময়িক বিষয়ে ৩ হাজারের বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। শফিকুল ইসলাম খোকন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি লি. এর একজন নিয়োগকৃত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক এবং স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষনা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক লোকাল গর্ভন্যান্সের (সিডিএলজি) সদস্য। তাছাড়া ডেনমার্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘ডেনিশ ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস’ এর সহযোগীতায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউটঅব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের মৎস শিল্পে টেকসই উন্নয়ন মৎস্য শ্রমিকদের জীবনমান ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গবেষনার দায়িত্ব পালন করেছেন শফিকুল ইসলাম খোকন।
প্রান্তিক জনপদে থেকেও লেখালেখির পাশাপাশি সামাজিক কার্যক্রমে অবদান রাখছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরণ ও গবেষনা প্রতিষ্ঠান ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধকে জানি’, ‘আস্থা’ নামে একটি সে¦চ্ছাসেবী সংগঠন এবং নাগরিকদের অধিকার আদায়ের জন্য একটি প্লাটফর্ম ‘পাথরঘাটা উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরাম’। যুক্ত রয়েছেন সে¦চ্ছায় রক্তদান সংগঠন ‘প্রত্যয়’ এর সাথে। পর্যটন স্পট হিসেবে সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদে জেগে ওঠা একটি চরকে ‘বিহঙ্গদ্বীপ’ নাম করণের মধ্যে তিনি অন্যতম। ইতোমধ্যেই বিহঙ্গদ্বীপটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। লিখেছেন পাথরঘাটা ব্রান্ডিং নিয়ে। এছাড়াও পাথরঘাটা ব্রান্ডিং লোগোর পরামর্শক ও ডিজাইন করেছেন তিনি। বরগুনা জেলায় প্রথম ইলিশ উৎসব এবং ইলিশের দেশ নিয়ে লেখালেখিতে অনেক সমালোচনায় পড়েন তিনি, পরে তা আলোচনায়ও আসেন। মানবতার কাজ করে হয়েছেন প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত ১০ খন্ডের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ লিখেছেন, লিখেছেন বরগুনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০০ বীর মুক্তিযোদ্ধার গল্প নিয়ে লেখা বইয়ে। তার লেখার মাধ্যমে অন্যতম পরিবর্তন এসেছে দীর্ঘ ২৭ বছরের ডাকসু নির্বাচন না হওয়া নিয়ে ‘ডাকসু নির্বাচন হয়না কেন?’এ শিরোনামে জাতীয় একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর উচ্চাদালতের নজরে আসলে মহামান্য হাইকোর্ট ৬ মাসের রুল দেন। পরে উচ্চাদালতের বেধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ শেষ মেষ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।
জন্মদিনে কথা হয় শফিকুল ইসলাম খোকনের সঙ্গে। তিনি কখনোই জন্মদিন পালন করেননি। ভালোবাসেন নতুন চ্যালেঞ্জ। লিখতে চান এবং বলতে চান নিষিদ্ধ সব সত্যের অব্যক্ত যত গল্প। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ইস্যূ নিয়ে লিখছেন এবং নতুনত্ব নিয়ে লিখতে সব সময় পছন্দ করেন তিনি।
হলুদ সাংবাদিকতা পরিহার করে সাংবাদিকতা একটি গবেষণা ও স্টাডি করার ভালো পেশা হিসেবে বেছে নিতছ নতুনদের প্রতি পরামর্শ তার।
শফিকুল ইসলাম খোকনের বাবা মো. সিরাজুল হক মোল্লা, মা রিজিয়া বেগম। বাবা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। বর্তমানে অবসরে আছেন। ৪ বোন ২ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য বর্তমানে পাথরঘাটা পৌরসভার কাউন্সিলর।