পাথরঘাটায় জোয়ারের পানিতে ১০ গ্রাম প্লাবিত
বরগুনার পাথরঘাটায় ভরা পুর্নিমার প্রভাবে বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১০টি গ্রাম। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় রান্না বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক শ পরিবারের।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার টার দিকে দুই নদীর জোয়ার শুরু হলে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের টেংরা, হাড়িটানা, কোরালিয়া, গহরপুর, নিজলাঠিমারা, রুহিতা, হাজির খাল, বাদুরতলা, চরলাঠিমারা এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়। এতে প্রায় শতাধিক পুকুর ও ১০ টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কোরালিয়া খালের বিভিন্ন এলাকায় রিং বাঁধ না থাকায় লোকালয়ে পানি ডুকে পরে। জোয়ারের পানির তোড়ে একাধিক স্থাপনা ও বসত ঘরের মালামাল ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি মৎস্য খামারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক বাড়ির ঘরের মধ্যে দুই-তিন ফুট পানি ডুকে পরেছে।
কোরালিয়া এলাকার সরেজমিন ঘুরে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে দেখা যায়, ওই গ্রামে পানি থইথই করছে। ঘরের মধ্যে পানি ডুকে পারায় খাটের উপর নারী ও শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে। এই এলাকায় তলিয়ে গেছে কয়েকটি ঘের। ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত। প্লাবিত হওয়া এলাকার মানুষের রান্নাবান্না হয়নি। এলাকা বাসীর দাবি খালের পাশের রিং বাধ গুলো সংস্কার না করা হলে পরবর্তী জোয়ারে আরো বেশি প্লাবিত হবে এ সকল এলাকা।
কোরালিয়া গ্রামের হাফিজা বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে আমার বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। এখন মেয়ে আমিনাকে নিয়ে চকিতে বসে আছি। রান্নাঘর ও চুলা মধ্যে পানিতে ডুবে থাকায় দু’দিন রান্না হয়নি।
একই এলাকার ঘের মালিক আব্দুস সালাম ও কাইয়ুম জানান, পানিতে তাদের পাঁচটি পুকুর ও তিনটি মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা পূর্বে কোন প্রস্তুতি নিতে পারেনি বলেও জানান।
হেলাল মিয়া জানান স্লুইস গেট এলাকায় রিং বাঁধ না থাকায় আমার উঠানে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। রান্নাঘরে হাঁটু পর্যন্ত পানি। চুলা পানির নিচে তলিয়ে আছে। ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোন মতে বাজার থেকে কিনে খেয়ে বেঁচে আছি।
পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, কোরালিয়া খালের রিং বাঁধটি দুর্বল হওয়ার পাথরঘাটার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে রিং বাঁধটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অতিশীঘ্রই বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করে কাজ শুরু করা হবে।