পাথরঘাটার হাড়িটানা-কোড়ালিয়া ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়ম
বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলার হাড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের ওপর নির্মিত সোয়া ২ কোটি টাকার সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়িারিং কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এ অনিয়ম দেখে স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদেরকে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা দেয়ার হুমকি দিয়েছে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সোলইমান। এঘটনার পর স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালে তারাও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ওই সেতুর উপরে মানববন্ধন করেন। পরে সাংবাদিকরা এলজিইডির প্রকৌশলী চন্দন কুমারের কাছে গেলে তিনি পিচডালাইয়ের সুড়কি ও কাদামাটির সংমিশ্রন তুলে ফেলে দিয়ে নতুন করে কাজ করার আশ^াস দেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২ কোটি ২১ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়িারিং কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের উপর একটি ব্রিজ ও সংযোগ সড়কের কাজটি পায়। ওই সেতুর কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মে মাসে এবং শেষ হওয়া কথা ছিল ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে। এর পর দীর্ঘদিন কাজ না করে ফেলে রাখেন মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়িারিং কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরবতীতে কাজ শুরু হলেও তা ধীরগতিতে করার কারনে ওই এলাকার মানুষের দুভোগের সৃস্টি হয়। পরবর্তীতে কিছুদিন আগে সেতুর কাজ শেষ করে সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করলে সেখানে অন্য একটি পিচডালাই সড়কের কাদামাটির সংমিশ্রনের শুড়কি নিয়ে ওই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করেন। এনিয়ে স্থানীয়রা বিরাধিতা করে মানববন্ধন করেছেন। তাদের দাবি, যাতে ভাল ভাবে সংযোগ সড়ক নির্মান করা হয়।
স্থানীয় রেজাউল করিম মিরাজ, মোসারেফ ফকির, আবুবকর, ফজলুর রহমান, মজিবুল হক জানান, এখানে কাদামাটি মিশ্রিত পচা ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার। আমরা সবাই মিলে বলার পরে গত কাল গভীর রাতে সেই মাটি মিশ্রিত খোয়ার উপর পানি দিয়েছে। তারা বেশীরভাগ সময়ে রাতের আধারে কাজ করে থাকে। আমরা এ প্রতিবাদ করলেই আমাদের চাঁদাবাজি মামলা দিবে বলে হুমকি দেয়, এই ভয়ে সাধারন মানুষ কেউ মুখ খুলতে পারি না। এখানে যেই কথা বলতে আসেন ম্যানেজার সুলাইমান তাকেই বিভিন্ন রকমের হুমকি দিয়ে থাকেন। তাই ভয়ে কেউ কথা বলে না।
এবিষয়ে মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়িারিং কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্তাধিকারীর আমির হোসননের মুঠোফোনে (০১৭৪৮৯৯১১৫১) দীর্ঘদিন ধরে একাধীকবার যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে ঘটনাস্থলে গেলে ওই ঠিকাদারের ম্যানেরজার সোলাইমান সাংবাদিকদের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে সাইফুল ইসলাম নামের এক শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ম্যানেজার তাদের এই নিয়মেই কাজ করতে বলেছেন তাই তারা করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী চন্দ কুমার জানান, হাড়িটানা-কোড়ালিয়া খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কের কাজের মান নিয়ে স্থানীয়রা আমাকে মুঠোফোনে অভিযোগ জানিয়েছে। আমার অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে ও ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে কাজ বন্ধ করেছি। তাদের শ্রমিকের সংকট থাকায় আগামীকাল (মঙ্গলবার) মাটির সংমিশ্রনের খোয়া উঠিয়ে নতুন করে কাজ করবেন বলে বলে জানান। তা না করলে তিনি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানিয়েছেন।