পাথরঘাটায় সরকারী অফিসে কসাইয়ের চামরা গুদাম, কতৃপক্ষ নিরব ভূমিকায়
বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) বরগুনার পাথরঘাটা অফিস কার্যালয়ে চামড়ার গুদাম বানিয়েছে কয়েকজন কসাই। এতে আসপাশে থাকা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা পরেছে দুর্ভোগে। বিটিআরসি কতৃপক্ষ, পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েও কোনো সমাধান পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ বিটিসিএল কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে তারা এখানে কাঁচা চামড়া মজুদ করছে।
পাথরঘাটা থানার সামনে অবস্থিত পাথরঘাটা বিটিসিএল অফিস এলাকায় শনিবার বেলা বারটার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় প্রবেশের একমাত্র গেটটি তালা বদ্ধ। যাতায়াতের সুবিধার্থে জনসাধারণ ভিন্ন পথ ব্যাবহার করায় সেখান থেকে ভিতরে প্রবেশ করতে দুর্গন্ধে নাকেমুখে রুমাল চেপে ধরতে হয়েছে। বিটিসিএল একটি পরিত্যাক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রবেশ করতেই দেখা মিলল বিশাল স্তূপাকারে কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। চারপাশে রক্তমাখা পানি ফ্লোরের সাদ চুষে নিচতলায় পরছে। চারপাশে মাছি ও পোকা কিলবিল করছে। সাংবাদিকদের সেখানে দেখে আসপাশে থেকে বাসিন্দারা এসে নানা অভিযোগ দিতে থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিতু, মনির হোসেন, সোহাইল, আক্তরুজ্জামান ও নাজমা সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, পাথরঘাটা থানা, জামে মসজিদ, ক্যাডেট মাদ্রাসা, সহ বরিশালের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমির আশপাশে আমরা বসবাস করি। কিন্তু এরমধ্যে পাথরঘাটা টিএন্ডটি ( বিটিসিএল) অফিসের দোতালায় কসাইখানায় জবেহকৃত গরুর চামড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সংরক্ষণ করে চারপাশের পরিবেশকে দূষিত করছে। সবসময় এখান থেকে দুর্গন্ধ নিতে হয় আমাদের। এছাড়াও সন্ধ্যায় মাদক সেবনের নিরাপদ স্থানেও পরিণত হয় এটি। এ পরিস্থিতির কারণে আমরা বাসা ভাড়া দিতে পারিনা। অতিরিক্ত মশা মাছি কারণে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে আমাদের পরিবারে। পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরকে অবহিত করেও কোনো সুরাহা হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল বাশার জানান আমি সহ থানা পুলিশ এর ভুক্তভোগী।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায় পাথরঘাটা বিটিসিএল সরকারি সম্পত্তির দখল করে সড়কের পাশে পাচ ছয়টি স্থায়ী কসাইখানা গড়ে উঠেছে। এই কসাইখানা গুলোর বর্জ আশেপাশে ফেলে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার পথচারী ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এই সড়কে চলাচলকারী ইব্রাহিম, রাসেল, ইমাম হোসেন, খাইরুল শরীফ সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, দম বন্ধ না করে এখান থেকে হাঁটা যায়না। প্রশাসন যেন দেখেও না দেখার ভান করে।
পাথরঘাটা বিটিসিএল অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ এর সাথে তার ব্যাক্তিগত (01756852606) নাম্বারে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অতিশীঘ্রই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ জানান, সরকারী ভবন ও জমি দখল করে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে! এটা দুঃখজনক। শীঘ্রই ওখান থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।