পাথরঘাটায় সড়কের পাশের গাছের বাকল তুলে গাছ মারলো কারা?
বরগুনার পাথরঘাটায় রাস্তার দুই পাশের গাছ কেটে নিতে অভিনব পন্থা অবলম্বন করছে অসাধু চক্র। তাজা গাছ কেটে আইনের বেরাজাল থেকে মুক্তি পেতে নতুন ও ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে তারা। এ জন্য তাজা গাছ কাটা সম্ভব না হলে প্রথমে গাছের ছাল বা বাকল তুলে ফেলা হয়। তাতে গাছটি একসময় মারা গেলে তা কেটে নিয়ে যায় তারা।
পাথরঘাটা বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের আমড়াতলা এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য, প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে প্রায় শতাধিক গাছের ছাল বা বাকল মাটি থেকে তিন-চার হাত পরিমাণ তুলে রাখা। এতে করে তাজা গাছগুলো শুকিয়ে মরে গেছে। কেউ কেউ সেই গাছ কেটে রান্নার লাকড়ি হিসেবে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায় পাথরঘাটা বরিশাল আঞ্চলিক সড়কের কাকচিড়া অংশের সড়কে পাশে থাকা গাছ গুলোর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর গণনার তালিকায় নেই। এ সুযোগে বাকল তুলে গাছগুলো অপরিণত বয়সে মেরে ফেলার পাশাপাশি অন্যান্য গাছ ও কেটে নিতে সহজ হচ্ছে গাছ খেকোদের।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করলে তারা জানান, গাছগুলো সড়ক ও জনপদের সড়কের পাশে অবস্থিত। এগুলো এলজিইডির আওতাভুক্ত নয়।
অপরদিকে বন বিভাগের সাথে কথা বললে তারা জানান, উপজেলা বনায়ন কমিটির সাথে চুক্তি করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ গাছ গুলো লাগানো হয়েছে। এগুলো বন বিভাগের আওতায় না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সংকল্প ট্রাস্ট পাথরঘাটা নতুন বাজার ব্রিজ থেকে কাকচিড়া সড়কের ১৭ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় দশ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বপন করেছেন। প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে তারা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা বরাবর গাছগুলো বুঝের নেয়ার জন্য বারবার আবেদনও করেছিলেন।
এ বিষয়ে সংকল্প ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ জানান, রাস্তার দুধারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় আমরা গাছের চারা রোপন করেছিলাম। কিন্তু কিছু অসাধু চক্র গাছগুলোকে মেরে ফেলার জন্য গাছের বাকল তুলে ফেলেছে। এর ফলে প্রায় কয়েক শতাধিক গাছ মরে শুকনো কাঠ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি সর্বশেষ গতবছর পর্যন্ত কয়েক বার বনায়ন কমিটির সভাপতি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত ভাবে বুঝে নিতে বলা হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ জানান, ইতিমধ্যে আমি বিষয়টি অবহিত হয়েছি। তবে রাস্তার ধারের গাছের বাকল তুলে গাছ মেরে ফেলা দন্ডনী অপরাধ। শীঘ্রই সরেজমিন পরিদর্শন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।