ভিতরে ডিজির মতবিনিময়, বাহিরে র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প চেয়ে মানববন্ধন
বঙ্গোপসাগর সহ উপকূলীয় এলাকায় ডাকাত মোকাবেলায় বরগুনার পাথরঘাটায় র্যাবের ক্যাম্প দাবি করে মানব বন্ধন করেছে স্থানীয় জনসাধারণ। রবিবার পাথরঘাটায় র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপকূলীয় জেলেদের নিয়ে মতবিনিময় সভা চলাকালে সম্মেলন কক্ষের বাহিরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে কয়েক শতাধিক মানুষ এই মানববন্ধন করে। এছাড়াও পাথরঘাটা শহরের বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্পের দাবিতে ব্যানায় টানিয়েছে উপকূল বাসী।
মানববন্ধনে তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে র্যাব মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। তবে উপজেলা পরিষদ চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকায় তারা বেশিক্ষণ সেখানে অবস্থান করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাঁকন।
রফিকুল ইসলাম কাকন জানান ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত ঘোষণা করেছেন। এর পিছনে বিশাল অবদান রেখেছেন রেপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাব। সম্প্রতি সময় আবারো উপকূলীয় এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় পাথরঘাটার এক জেলে নিহত সহ কয়েক শতাধিক জেলেকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান যদি নিয়মিত বঙ্গোপসাগরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল থাকতো তাহলে পাথরঘাটার জেলে মুসার নৃশংসভাবে খুন হতে হতো না।
স্থানীয় জেলেরা জানান বঙ্গোপসাগরে বর্তমানে মাছ শিকার করতে যেতে হয় আতঙ্কের মধ্যে থেকেই। যে সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বঙ্গোপসাগর পাহারা দেয়ার কথা তারা কোন সময় নদীতে ও নামে না। উল্টো তারা উপকূলে বসে বিভিন্ন লক্ষ্যে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। সেক্ষেত্রে জলদস্যুতা দমনে রেপিড একশন ব্যাটালিয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সে কারণে পাথরঘাটায় র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্পের দাবিতে তারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছেন।
জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান পাথরঘাটায় র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প ও সি প্লেনের ব্যবস্থা করা উপকূল মানুষের প্রাণের দাবি।
তিনি জানান, দস্যু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটায় র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন উপকূলবাসীর দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে। এ দাবির পাশাপাশি দস্যুদের গ্রেফতার বা আটক নয়, তারা দস্যুদের বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে বিচার চান উপকূলের জেলেরা।
পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন জানান, একসময় পাথরঘাটা তীরবর্তী বিষখালি নদীর মোহনাতেও ডাকাতি হতো। কিন্তু তা র্যাব সদস্যদের প্রচেষ্টায় দুর হয়েছে। উপকূলীয় জেলেদের বিশ্বাস অর্জন করেছে র্যাব। তাই তারা এলাকায় স্থায়ীভাবে একটি ঘাঁটি স্থাপনের দাবী জানাচ্ছে।
র্যাবের ঘাঁটির বিষয় র্যাব প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে। ঘাঁটির বিষয় অনেক আইনি প্রক্রিয়া আছে আমরা চেষ্টা করবো। তবে আমাদের নিয়মিত টহল আছে চলবে। আমরা সব সময় মৎস্যজীবীদের পাশে ছিলাম থাকবো।
র্যাব ডিজি দস্যুদের উদ্দেশে বলেন, আমরা অন্যদের মতো কথার কথা বলতে আসিনি। আমরা যা বলে তা করে দেখাই। কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে জলদস্যুদের বলেন, আপনারা এ পেশা ছেড়ে দেন। এ পেশা না ছাড়লে আমাদের হাত রেখে রেহাই পাবেন না। আগের মতো অবস্থাই হবে আপনাদের। আপনাদের পূর্বসূরিদের অবস্থা যেমন দেখছেন আপনাদেরও একই পথের পথিক হতে হবে।