পাথরঘাটায় নারী এমপির বাসার সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা, থানায় ডায়েরি
বরগুনার সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সুলতানা নাদিরা সবুরের বাসা তাক করে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কে বা কারা ওই সিসি ক্যামেরাটি স্থাপন করেছে এ নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১৫- বরগুনা) সংসদ সদস্য নাদিরা সবুরের পক্ষে তাঁর কোম্পানী মধুমতি টাইলসের জেনারেল ম্যানেজার সে্লিম খলিফা পাথরঘাটা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সাধারণ ডায়রিতে সেলিম খলিফা উল্লেখ করেছেন, আমাদের কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ৩১৫ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য পাথরঘাটা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাংসদের বাসার দিকে তাক করে কে বা কারা একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। যা কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচলাক ও নারী সংসদ সদস্য নাদিরা সবুরে জীবনের জন্য হুমকী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে আমরা মনে করি।’
ডায়েরি বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে এমপি সুলতানা নাদিরা সবুর বলেন, ‘আমার বাসায় নজরদারির জন্য কেউ গোপনে ক্যামেরা স্থাপন করেছে, এটা আমার জন্য বিব্রতকর। এটি আমার গোপনীয়তা সুরক্ষার জন্য হুমকি।’ আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমার কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার বিষয়টি নিয়ে পাথরঘাটা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কে এই সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজে প্রধান ফটকের উত্তর দিকের বিদ্যুতের খুঁটিতে একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ওই ক্যামেরার সামনের দিকে সড়কের দক্ষিণে এমপি সুলতানা নাদিরার বাসা। অন্যদিকে এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন কলেজের বিপরীতে দুলাল কোম্পানির মালিকানাধীন একটি ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। রিমনের ভাড়া বাসা থেকে এমপি সুলতানা নাদিরার বাসভবনের দূরত্ব মাত্র ৩০ ফুট। তার স্বামী প্রয়াত সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু ২০০২ সালে বাড়িটি নির্মাণ করেন।
গোলাম সবুর টুলুর বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি জানান, সম্প্রতি বাসার সামনে সিসি ক্যামেরাটি তাদের নজরে আসে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এটি পৌরসভা বা থানার পুলিশের কেউ স্থাপন করেনি। এমপি সুলতানা নাদিরার পরিবারের ধারণা, তাদের বাসায় নজরদারির জন্য ক্যামেরাটি এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন বসিয়েছেন।
রুমকি বলেন, ‘আমার বাসায় কারা আসা-যাওয়া করে তা নজরদারি করার জন্যই এমপি রিমন ক্যামেরাটি স্থাপন করেছেন। এটি একজন নাগরিকের প্রাইভেসি লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টিতে বিব্রত।’
সিসিটিভি ক্যামেরার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকনও বলছেন, ওই ক্যামেরা বসানোর সঙ্গে তাদের কোনো যোগ নেই।
পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান, সাংসদের জীবনের জন্য হুমকি ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটে উল্লেখ্য করে মধুমতি টাইলস কোম্পানীর ম্যানেজার সেলিম খলিফা সোমবার দুপুরে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ওই ক্যামেরাটি কে বা কারা কি উদ্দেশ্যে বসিয়েছে বিষয়টি আমরা খোঁজ নেব।
এমপি নাদিরা সবুরের পরিবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার বাসার সামনে রাস্তার দুই দিকে দুটি সিসি ক্যামেরা বসাইছি। কারো বাসার দিকে আমি ক্যামেরা বসাইনি। ‘আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য রাস্তা মনিটর করতে ওই দুটি ক্যামেরা দিয়েছি। আপনি চাইলে আমি আপনাকে মনিটরে দেখাব।’
এমপি সুলতানা নাদিরা সবুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা স্রেফ তাদের মনের ভ্রান্তি, আমার সঙ্গে এটা গায়ে পড়ে ঝগড়ার মতো আচরণ ছাড়া আর কিছু না।’