মধ্যরাত থেকে শুরু ২২ দিনের অবরোধ

asraful islam
asraful islam,
প্রকাশিত: ০৬:৩৩ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ০৬:৩৬ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২১

পাথরঘাটা বরগুনা প্রতিনিধি,

বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই, প্রকৃতির দুর্যোগ, কখনো দস্যুদের হামলা, আবার কখনো দাদনের দায়ে আটকা চির দারিদ্র্যের সঙ্গে জিম্মি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জেলেরা। সব সমস্যা মোকাবিলার পর তিনবেলা খেয়ে বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যান তাঁরা। এ ছাড়া সরকারি বিধিনিষেধও নিয়মিতই মানতে হয় তাঁদের।


আজ রবিবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। এ সময় ইলিশকে স্বাচ্ছন্দ্যে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতেই সরকার এই সুযোগ দিয়েছে। প্রতিবছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে মিলিয়ে মোট ১৫ থেকে ১৭ দিন হচ্ছে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ দিয়েছে সরকার।


বঙ্গোপসাগরে মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণও এ সময় নিষিদ্ধ থাকবে। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে এ সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।


জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৩৬ হাজার ২২ জন। তার মধ্যে সমুদ্রগামী রয়েছে ২৭ হাজার ২৭৭ জন জেলে।


প্রান্তিক জেলেরা জানান, সাগরে ২২ দিন অবরোধ মাছ ধরতে পারছেন না তাঁরা। ঘরে ছেলেমেয়ের খাবার ও সংসারের খরচপাতি নিয়ে মহাবিপদে আছেন তাঁরা। ২২ দিন কীভাবে সংসারের খরচ জোগান দেবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না । ৬৫ দিনের অবরোধে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেন অনেকই।


বিএফডিসি পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক লে . মো . লুৎফর রহমান বলেন , গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় দুই শ মেট্রিক টন ইলিশ বেশি অবতরণ হয়েছে । এর বেশির ভাগ ছিল জাটকা । ফলে জেলেরা দাম পাননি , অন্যরাও লাভবান হতে পারেননি ।


পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকতা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা । যারা এই অবরোধ না মেনে মা ইলিশ শিকার করবে কাউকে এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবেনা। জাতীয় স্বার্থ যারা ধ্বংস করতে চাইবে, তাদের বিষয়ে কোনো ধরনের বিবেচনা বা অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিনতর পদক্ষেপ নিতে আমরা কুণ্ঠাবোধ করব না।  মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যত কঠিন হওয়া লাগে, তত কঠিন হতে হবে। কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)