কলা চাষে সফল পাথরঘাটার নুরুল আলম
কলা চাষ করে ভাগ্য ফিরেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের নুরুল আলমের। নিজ বসত বাড়ির সামনে ও পিছনে ২ একর জমিতে কলা চাষ শুরু করেন ২০১৯ সালে। শুরুতেই তিনি ১হাজার চারা রোপণ করে ১০ লাখ টাকার কলা বিক্রি করে। খরচ বাবদ প্রথম বছরে তার লাভ হয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। সরেজমিন গিয়ে নুরুল আলমের সাথে কথা বলে সফলতার এ কথা জানা যায়। বর্তমানে তার বাগানে ২হাজার কলা গাছ আছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫শ গাছে কলা রয়েছে।
কলা চাষী নুরুল আলম কালমেঘার দক্ষিণ কুপধন এলাকার আব্দুল মতিন মিয়ার ছেলে। এর আগে তিনি ঢাকায় এক্সপোর্ট এর কাজ করতেন।
নুরুল আলম জানান, ‘পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের থেকে তথ্য নিয়ে বাড়ির উঁচু জমিতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে পরীক্ষামূলক ১হাজার পিচ সাগর কলা গাছ রোপণ করে চাষ শুরু কর। প্রথম বছর সফলতা অর্জন করতে পেরে বাড়িতে প্রবেশের পথ টুকু বাকি রেখে সম্পূর্ণ স্থানে দ্বিতীয়বার প্রায় ২হাজার কলা গাছ রোপন কর’। এতে আমি সফল হয়েছি। তবে করোনা মহামারীর ক্লান্তিলগ্নে সকল দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কলা বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
বাগান ঘুরে দেখা যায় শত শত ছড়া কলা পেকে হলুদ হয়ে ঝুলে রয়েছে। বিক্রির অভাবে গাছে বসে পাখিতে খেয়ে সাবাড় করছে অনেক ছড়ি কলা। প্রতিটা গাছের কলার ছড়িতে দেড়’শ থেকে দুই’শ পিচ কলা ঝুলতে দেখা যায়। বাগান মালিকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতি ছড়া কলা প্রায় ১২’শ থেকে ১৫’শ টাকায় বিক্রি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।
পাইকার সুশান্ত হাওলাদার এখান থেকে কলা ক্রয় করে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের চায়ের দোকানে বিক্রির পাশাপাশি আসেপাশের উপজেলাতেও গিয়ে বিক্রি করি। কিন্তু কঠোর লকডাউনে এসব দোকানপাট বন্ধ থাকায় ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। অপরদিকে গাছে বসেই বাগান মালিকের কলা পেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল জানান পাথরঘাটায় এর পূর্বে কেহ ব্যবসা হিসেবে কলা চাষ করেনি। তবে নুরুল আলম আমাদের পরামর্শে কলা চাষ করে উপকূলীয় দক্ষিণ এলাকায় কলা চাষের বিপ্লব ঘটিয়েছে। কোন ধরনের পটাশিয়াম কেমিক্যাল ছাড়া এসকল কলা বাজারজাত করছেন তিনি। কিন্তু করোনাকালীন সময় কিছুটা লোকসানের মুখে পড়েছে নুরুল আলম। তবে লকডাউন কেটে গেলে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।