পাথরঘাটার বলেশ্বরের বুক সৌন্দর্যে ঘেরা ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ (ভিডিও সহ)
এএসএম জসিম
পাথরঘাটা সাগর মোহনায় নতুন দুর থেকে দেখলে মনে হবে সাগরের মাঝে বড় কোন সবুজ পাহাড়,, সাদা বালুচরের লাল কাকড়া লাল গালিচা, দুরে সাদা ধুসর রঙের গাংচিল, বকের সারী, চেগা পাখি। বনের মধ্যে পায়ে হাঁটা পথে কিছুদুর গেলেই পাখির কলোরব আর চোখের সামনেই দৌড়ে পালাবে মায়া হরিনের পাল। এই দ্বীপ চরে বিকালটা বেশি ভালো লাগে, বিকেলের গৌধুলীবেলায় যখন সূর্য সাগরের মাঝে ডুব দেয়,আহা,, তখন পশ্চিমের আকাশটা সোনালি আভায় কি অদ্ভুত রঙ্গিন আলোয় মাখামাখি করে, চরের পাশে জেলেরা জাল দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ সহ নানা প্রজাতির মাছ ধরে, ইচ্ছা করলে আপনিও খুব অল্প টাকায় মাছ কিনে,তা ভেজে খেতে পারেন।
বিহঙ্গ দ্বীপের চারপাশে অনেক ডুবচর আছে আপনি ইচ্ছা করলে মাইলের পর মাইল সাগরের মাঝে হাঁটুপানির মধ্যে হাঁটতে পারেন।
সাগরের বুকে জেগে ওঠা একটি নাম হীন দ্বীপ নিজ মহিমায় নাম ধারণ করল“ বিহঙ্গ দ্বীপ”। পাথরঘাটা উপজেলার বঙ্গোপসাগরে বলেশ্বর নদীর মোহনায় আবিস্কৃত হলো বিহঙ্গ দ্বীপ নামে নতুন একটি দ্বীপ। পাথরঘাটার স্থানীয় সাংবাদিক ও কিছু সমাজকর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে ও নাম ফলক উন্মোচন করে বলেশ্বর মোহনায় নতুন জেগে ওঠা দ্বীপটির নমকরণ করেন।
দ্বীপটির চরপাশে বয়ে চলা নদীর সমূদ্র সৈকত দ্বীর্ঘ বীচ পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। দ্বীপটির দৈর্ঘ প্রায় ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার আর প্রস্থ্য দেড় কিলোমিটার।
পাথরঘাটা উপজেলা থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট নদী পথে ইঞ্জিন চালিত বোর্ড চালিয়ে যাওয়া যাবে এ দ্বীপে। দ্বীপের পশ্চিমে রয়েছে বিশ্ব ঐতিজ্য সুন্দরবন। দ্বীপে রয়েছে র্দীঘ বালুতট, সাগরের গর্জণ করে ফনাতুলে আছড়ে পড়ে সাগরের ঢেউ। আছে বন্য গাছ গাছালি। সেখানে বাস করে শত রঙ ও প্রকারের দেশী ও বিদেশী পাখি, পাখি করে কলরব প্রত্যুষে ও গোধূলীতে।
জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে উৎসাহী ভ্রমন বিলাসী সাংবাদিক মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ, গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম খোকন, আরফিুর রহমান, এএসএম জসিম, চিত্র শিল্পি মেহেদী হাসান, আবুজার রফি, টাইগার টিমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল, ৭ম শ্রেনির শিক্ষাথী মো. বাইজিদ, জেলে মোস্তফা মুন্সী সমবেত হয়ে নামসম্বলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়ে বিহঙ্গ দ্বীপের নামকরণ করেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটার প্রবীন সাংবাদিক ও উন্নয়ন সংগঠক মির্জা খালেদ পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, উপকূলীয় পাথরঘাটায় রয়েছে হরিনঘাটার নৈস্বর্গীক বন। অদূড়ে বলেশ্বর বিধৌত সুন্দরবনের নিস্বর্গেও হাতছানি আর পানিমূল এ উপকূলে জেলে জীবন এসব মিলিয়ে পাথরঘাটা জনপথ এক নয়নাভিরাম নিস্বর্গের মায়া বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় পারঘারটা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূড়ে বলেশ্বর নদীর পদ্মা স্লুইজ গেট মোহনার অদূড়ে জেগে ওঠা চর বিহঙ্গ দ্বীপ এখন নতুন এক সম্ভাবনা। প্রতিদিন স্থানটি দর্শন করতে এলাকার উৎসুক জনতা সেখানে যাচ্ছেন। আমরা এটি দ্বীপ বিহঙ্গ নামে পরিচিতির জন্য জনসংযোগ চালাচ্ছি। আমরা আশাবাদী পর্যটনে দ্বীপ বিহঙ্গ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় আরো সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে।
এবিষয়ে পারঘাটা বনবিভাগের রেইঞ্জ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান আকন পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, সম্প্রতি চরটি জেগে উঠেছে। আমরা চরটি পরিদর্শন করেছি। সেখানে বনায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বনায়ন করতে পারলে এটি একটি আকর্ষনীয় পর্যটক স্পট হতে পারে। এছারা পাখিদের অভয় আশ্রয় স্থল ও হতে পারে। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
কি ভাবে আসবেন……
ঢাকা থেকে লঞ্চে ও গাড়িতে আসতে হবে পাথরঘাটায়, ঢাকা সদরঘাট থেকে বরগুনার লঞ্চেও কাকচিঁড়া ঘাটে নেমে গাড়িতে যেতে হবে পাথরঘাটা সদরে তারপর রূইতা গ্রামে, রূইতা বটতলা থেকে ট্রলার ও নৌকা ভাড়া করে বিহঙ্গ দ্বীপে।
পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৪ মার্চ