পাথরঘাটায় স্ত্রী ও সন্তান হত্যার ঘটনায় ঘাতক শাহীন আটক
বরগুনার পাথরঘাটায় স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ঘাতক শাহিন মুন্সীকে গ্রেপ্তার করেছে সি আই ডি।
সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের বন্দর থানা থেকে তাকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাথরঘাটা সার্কেল তোফায়েল হোসেন সরকার।
এ ঘটনায় গত ৩ জুলাই আরো দুজনকে আটক করেছে পাথরঘাটা থানা পুলিশ। তারা হলেন ঘাতক শাহিনের মা শাহিনুর বেগম ও মামাতো ভাই ইমাম হোসেন। ৪ জুলাই আটক দুজনকে ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করে পৃথক-পৃথক ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত আবেদন শুনানির জন্য রেখে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শাহিন মুন্সী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব হাতেমপুর গ্রামের খলিলুর রহমান মুন্সীর ছেলে। সুমাইয়া একই গ্রামের রিপন বাদশা’র মেয়ে।
চট্টগ্রাম সিআইডির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার জানান পারিবারিক কলহের জের ধরে ১ জুলাই রাত দশটার দিকে সুমাইয়া টয়লেটে গেলে পিছু নেয় শাহিন। সেখানে থাকা লায়নলের সুতা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে সুমাইয়াকে। এর পর বাড়ি থেকে কোদাল নিয়ে মাটি খুঁড়ে মাটি চাপা দেয় শাহিন একাই। এর পরে ঘরে গিয়ে নয় মাসের শিশু জুঁইকে কান্না করতে দেখে তাকে নিয়ে খালের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে ঘাতক সাহিন। এরপর মায়ের সাথেই বাড়ির পাশে পুঁতে রাখে জুঁইকে।
ঘটনার দু’দিন পর ৩জুলাই নিজ বাড়ির সংলগ্ন খালের পাড়ে গর্ত থেকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা পুলিশ। পরের দিন ময়না তদন্ত শেষে সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়।
মরাদেহ উদ্ধারের পর গত ৩জুলাই বিকেলে সুমাইয়ার বাবা রিপন বাদশা বাদী হয়ে জামাই শাহিন মুন্সী, তার মা শাহিনুর বেগম, মামাতো ভাই ইমাম ও ইমামের শ্যালক রিমন সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামি করে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
যেভাবে পালিয়ে চট্টগ্রাম যায় শাহিন।
চট্টগ্রাম সিআইডির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার জানান মা ও মেয়েকে হত্যার চাঞ্চল্যকর বিষয়টি গনমাধ্যমে প্রকাশের পর শাহিন পাথরঘাটা ত্যাগ করে চরদোয়ানি হয়ে খুলনাতে তার এক সতবোনের বাড়িতে যায়। শাহিনের বোন বিভিন্ন গনমাধ্যমে বিষয়টি টের পেয়ে সেখানে স্থান দেয়নি। পরবর্তীতে শাহিন খুলনা থেকে খাগড়াছড়ি তা আরেক সতবোনের বাড়িতে যায়। বিষয়টি তারাও টের পেয়ে সেখানেও শাহিন কে আশ্রয় দেয়নি। পরবর্তীতে শাহিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে দু’দিন ঘোরাঘুরি করে একটি মটর গ্যারেজে থাকা খাওয়ার চুক্তিতে কাজ নেয়। সেখান থেকে গত সোমবার বিকেলে সিআইডি পুলিশ শাহিন কে আটক করে।
তোফায়েল হোসেন সরকার জানান, অতি শীঘ্রই শাহীনকে পাথরঘাটায় এনে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর আগে ঘটনার পর শাহীনকে আটকের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার।