পাথরঘাটায় উদ্ধার কাজে গিয়ে নিজেই গেল আটকে, ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার রোষানলে
ঘটনা, দুর্ঘটনা, উদ্ধার, সেবা। সব কাজেই ডাক পরে ফায়ার সার্ভিসের। দিন রাত ২৪ ঘন্টাই তারা প্রস্তুত যেকোনো ধরনের সেবা প্রদান করতে। যখন জরুরী সেবা দিতে গিয়ে নিজেই আটকে যান তখন তাকে উদ্ধার করবে কে? এমই প্রশ্ন তুলেছেন বরগুনার পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ম্যান মারুফ হোসেন, মিঠুন।
মারুফ হোসেন পাথরঘাটা নিউজকে জানান, সোমবার দুপুরে ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে জরুরী সেবা প্রদান করতে গিয়ে নিজেদের বহন করা গাড়িটি আটকে যায় চায়না প্রজেক্টের আওতায় নির্মিত স্লুইজ গেট এর বাইপাস সড়কে। এতে করে উদ্ধার করতে যাওয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগে অতিরিক্ত একঘন্টা। এ পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের রোষানলে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার কাজে গিয়ে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় যা কখনো ভাবা যায় না।
পাথরঘাটা স্টেশন ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমাদের কাছে আসা প্রতিটি কলকে গুরুত্ব দিয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কিন্তু বাধ সাধে সড়কের বিভিন্ন বাইপাস গুলো। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয় তাদের।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চায়না প্রজেক্ট এর আওতায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে স্লুইজ গেট নির্মাণের কাজ চলছে। একারণে পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া সড়কের চরদোয়ানী পর্যন্ত মহাসড়কের পাচ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে এমন পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ বাইপাস। যা দায়সারা ভাবে ফেলে রাখা হয়েছে কয়েক বছর ধরে। প্রতিবছর বৃষ্টির সময়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এ সড়কে। একারণে অতিরিক্ত ২৩ কিলোমিটার দূর থেকে ভিন্ন সড়কে ঘুরে আসতে হয় ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পাথরঘাটা গামী পরিবহন গুলোকে।
সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী মনির হোসেন, ফোরকান আহমদ, সুমন মিয়া, জান্নাতুল জারা, মাইশাসহ ভুক্তভোগীরা জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদামাটি ভিজে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই স্থানগুলি থেকে মানুষ হেঁটে পার হতে পারে না।
এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মঠবাড়িয়ার সড়কের পাঁচটি পয়েন্ট নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বিব্রত। তিনি জানান, এই পয়েন্টের ১ হাজার পঞ্চাশ মিটার সড়কের দায়িত্ব কেউ নিতে চায়না। চায়না প্রজেক্টের আওতায় স্লুইজ গেট নির্মানের জন্য এইসব স্থান গুলো মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বললেও কেউ এই পয়েন্টগুলোর দায়িত্ব নিতে চায় না। একারণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ সড়কে যাতায়াত কারীদের।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।