ইয়াসের পরবর্তী প্রভাব পাথরঘাটায় বাড়ছে ডায়রিয়া প্রবনতা
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে লবণ পানি প্রবেশ করায় উপকূলীয় এলাকায় ডায়রিয়া প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুদিনে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫১ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ জন ভর্তি রয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ জানান, পাথরঘাটায় নিরাপদ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগ চলমান ছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। তবে জলোচ্ছ্বাসে পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকায় লবণ পানি প্রবেশ করায় এবং সেই পানি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করায় পানিবাহিত রোগ আবারো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
গত দুদিনে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে আরো সাড়ে ৩শ ডায়রিয়ার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা, চরলাঠিমারা, জিনতলা, হাড়িটানা, গহরপুর, পদ্মা, রুহিতা, হাতেমপুর, বড়ইতলা এলাকার নিম্ন অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। যা বিভিন্ন পুকুরে প্রবেশ করে।
বরগুনা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ উপজেলার পৌরসভাসহ ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে কাঠালতলী, কালমেঘা পাথরঘাটা সদর, চরদুয়ানী, নাচনাপাড়া ইউনিয়নে ভূপ্রাকৃতিক কারণে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। সেকারনে এ এলাকার বাসিন্দারা পুকুরের পানি বিশুদ্ধকরণ করে পান করে থাকে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৬ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দে ৪৪ পুকুর খনন ও সংস্কারের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসকল পুকুর গুলোতে ইতিমধ্যে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় পানি সংকটে পরেছে কয়েক লাখ মানুষ।
পাথরঘাটা উপজেলা জনপ্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী দোলা মল্লিক জানান জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে ২৫ টি খাসপুকুর তলিয়ে গেছে। এছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ৫ শতাধিক পুকুরে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ পানি নিরুপায় হয়ে এলাকার বাসিন্দারা পান করছেন।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা জানান, উপকূলীয় পাথরঘাটায় দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানি সমস্যা রয়েছে। পানির সমস্যা প্রাথমিকভাবে সমাধানের জন্য ভ্রাম্যমাণ পানির গাড়ি দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।