পাথরঘাটায় বৌয়ের কথায় মাকে ঝাড়ুপেটা, তবুও ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই মায়ের
স্বামী মৃত্যুর পর দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি করে সন্তানদের বড় বানিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে সুখে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন হালিমা বেগম (৬৫)। কিন্তু ছেলে বৌয়ের কথায় ঝাড়ুপিটা খেতে হবে এমন ভাবনা কস্মিনকালেও ভাবেনি মা হালিমা বেগম। তবে বাস্তবে তাই হলো।
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের মধ্য কালমেঘা গ্রামে। হালিমা বেগম একই গ্রামের মৃত বাহের আলী হাওলাদারের স্ত্রী।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বয়সের ভারে আগের মত কাজ করতে পারেনা হালিমা বেগম। তা নিয়ে বৌ শাশুড়ির মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া হয়। বেশ কয়েকবার মিমাংসা ও করেন স্থানীয়রা। সর্বশেষ ৩০ মে রবিবার রাতে দিন মজুরের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে বৌয়ের কথায় ক্ষীপ্ত হয়ে মাকে ঝাড়ু পেটা করে দুলাল। পরদিন বিষয়টি মা হালিমা বেগম স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানকে অবহিত করে।
ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, মাকে ঝাড়ুপিটা করার ব্যাপারে আমি দুলালের কাছে জানতে চাইলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয় আমাকে। পরবর্তীতে আমার কাছে অভিযোগ দেয়ার কারণে দুলাল তার মাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।
হালিমা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আমি অনেক কষ্ট করে সন্তানদের বড় করেছি। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দিনমজুরের কাজ করেছি। কাজ না পেলে ভিক্ষা করে ওদের বড় করেছি। কিন্তু বৌয়ের কথায় আমাকে দুলাল মেরেছে। তার পরও কোনো অভিযোগ নেই ওর প্রতি। আমি ওকে অভিযোগ দিলে ও ধংস হয়ে যাবে। আমি ওরে মাফ করে দিয়েছি।
এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা দুলালের কাছে জানতে চাইলে সে তার ভুল বুঝতে পেরে গনমাধ্যম কর্মীদের সামনেই মায়ের পা ধরে মাফ চেয়ে মাকে ঘরে নিয়ে যায়। ভবিষ্যতে এধরনের কোন আচরণ করবে না বলেও তার মাকে কথা দেয় দুলাল।
এবিষয়ে সংবাদ সংগ্রহের করতে আসা স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও পাথরঘাটা নিউজের সম্পাদক আকন মোহাম্মদ বশির জানান, মাকে ঝাড়ুপিটা করে ঘর থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছিলাম। তবে গনমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হওয়াতে আমরা আনন্দিত।