পাথরঘাটায় বেরিবাঁধ পরিদর্শনে সচিব, পরিদর্শন যেন কাগজে কলমে না থাকে, দাবি উপকূল বাসীর
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে পানির চাপে বরগুনার পাথরঘাটায় ক্ষতিগ্রস্ত বেরিবাঁধ পরিদর্শনে আসেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার। পরিদর্শনকালে বাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারা টেকসই মজবুত বেরিবাদের দাবিতে মানববন্ধন করেন এবং প্লেকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সোমবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার পদ্মা রুহিতা এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ পরিদর্শনে সময় উপস্থিত ছিলেন বরগুনার দুই আসনের সংসদ শওকত হাসানুর রহমান রিমন, বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইসার আলম , পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা সহ জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ভুক্তভোগীরা সচিবে ও পানি সম্পদ অধিদপ্তরের কতৃপক্ষের কাছে দাবি করেন “পরিদর্শন যেন কাগজে কলমে না থেকে তা বাস্তবে পরিণত হয়”। কেননা ঘূর্ণিঝড় সিডর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি প্রকৃতিক দুর্যোগে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জিনতলা, পদ্মা, রুহিতা, কাঠালতলী, কালমেঘা, কাকচিড়া এলাকায় বেড়িবাঁধগুলো। দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে এসব এলাকা বিভিন্ন দপ্তর থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বারবার এসে পরিদর্শন করলেও স্থায়ী ভাবের কোন বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছেনা উপকূলবাসী।
বাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দা, জাহাঙ্গীর ফকির, জাকির হোসেন, মনির হোসেন প্রতিবেদককে জানান ২০০৭ সালে পদ্মা রুহিতা বেরিবাঁধ ভেঙে ৯৭ জন মানুষের প্রান হানি ঘটে। সেই থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে টিকে আছে এ এলাকার সাড়ে সাত হাজার বাসিন্দা। বার আশ্বাস দিয়েও স্থায়ী কোনো বেরিবাঁধ হচ্ছে না এ এলাকায়। প্রতিবছর জোয়ারের ভেঙে প্লাবিত হয় আর নামে মাত্র বস্তা আর বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা বেরিবাঁধ। ভাঙন এতোই বেশি যে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নেওয়াও সুযোগ হচ্ছে না তারা। এভাবে ভাঙতে থাকলে একসময় পাথরঘাটা বিলীন হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম জানান, জেলার ৬৫ স্থানের প্রায় ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে পাথরঘাটায় বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রয়েছে। তবে ভেঙে যাওয়া জায়গাগুলো ইতোমধ্যেই মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাসানুর রহমান রিমন জানান, ষাটের দশকের বেরিবাধ অনেকটা নিচু ও নাজুক হয়ে গেছে। সে কারণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত বেরিবাঁধ গুলো। এ গুলোকে উঁচু এবং শক্ত মেরামত জন্য প্রস্তুবনা দেয়া হলে মন্ত্রী সভায় তিনটি প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে পাশ হয়েছে। একনেকের বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।