পাথরঘাটায় শালিশ বৈঠকে দোররা মারার রায় আওয়ামীলীগ নেতার! অপমানে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

বরগুনার পাথরঘাটায় শালিস বৈঠকে এক স্কুলছাত্রীকে দোররা মারার রায় ঘোষণা করেন সালিশ প্রধান ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন। এতে লজ্জায় ওই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন স্কুল ছাত্রীর বাবা নাসির মহড়ার।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আমড়াতলা গ্রামে। এর আগে সোমবার দুপুরে সালিশদার জামাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
ঐ স্কুল ছাত্রীর বাবা নাসির মহড়ার জানান, গত শনিবার তাদের দুটি হাঁস মেরে ফেলে এবং একটি ছাগলকেও পিটিয়ে আহত করে তার ভাই বেলাল হোসেন। হাঁস মারা ও ছাগল আহত করার কারণ নাসির মহড়ার স্ত্রী রেশমা ও তার মেয়ে বেলালের কাছে জানতে চায়। তখন বেলাল ও তার অপর ভাই ছরোয়ার ও ছরোয়ারের ছেলে হাসান তাদেরকে বেদম মারধর করে। এই বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম নাসিরকে জানালে সোমবার সকালে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা জামাল হোসেন ও স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মধু বিএসসিকে শালিশ প্রধান মেনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত দেয়।
বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় কামাল হোসেন জানান, উভয় পক্ষের কথা শুনে আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন লোকজনের উপস্থিতিতে ঐ স্কুল ছাত্রীকে অযথা দোররা মারার রায় ঘোষণা করেন। এতে ঐ ছাত্রীর বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল হোসেনের বিচার দাবি করেন মধু বিএসসির কাছে। সেসময় উভয়ের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। তবে মঙ্গলবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান মধু বিএসসি।
ঐ স্কুল ছাত্রী জানান, কিছুদিন পূর্বে পারিবারিক ভাবে এক প্রবাসীর সাথে বিবাহের জন্য আংটি বদল হয় তাদের। শনিবারের ঘটনা ও সোমবারের সিদ্ধান্ত আমার হবু শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানতে পেরে আমাকে তাদের বৌ হিসেবে গ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দিতে ফসলে দেয়া কিটনাশক পান করি।
শালিস বৈঠকে জামাল মিয়া ঐ ছাত্রীকে দোররা মারার রায় দেয় বলে নিশ্চিত করেছেন অপর শালিস প্রধান মধু বিএসসি। তবে অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা জামাল হোসেন জানান, ঐ স্কুল ছাত্রী উত্তেজিত হয়ে তার চাচাদের ব্যাপারে অশালীন মন্তব্য করলে তিনি দোররা মারার কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করেছি।