পাথরঘাটা পৌরবাসীর একমাত্র ভরসা রিজার্ভ পুকুরটিও অবহেলিত
বরগুনার পাথরঘাটায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুম এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বেশিভাগ পুকুর শুকিয়ে যাওয়া ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একযোগে ৪৭ টি পুকুর খনন করায় এ সংকট দেখা গেছে। পাথরঘাটা পৌরসভার কয়েকটি পুকুরে সামন্য পানি থাকলেও খাবার ও রান্না করার জন্য পৌর বাসীদের ভরসা উপজেলা পরিষদের সামনের এ রিজার্ভ পুকুরটি।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নে সরকারি-বেসরকারি মিলে বিকল্প পানির উৎস হিসেবে ৫৮৯ টি পুকুরে বালুর ফিল্টার (পিএসএফ) বসানো হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে সচল আছে মাত্র ৯৬ টি। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা দেওয়া আরো ২০ টির মত ফিল্টার সচল আছে। বাকি সকল ফিল্টার গুলো একদম পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে। এছাড়াও এ উপজেলায় পানি সমস্যা নিরসনে ৯০৩ টি অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও এর মধ্যে ৮২৮ টি অকেজ।
এরমধ্যে পাথরঘাটা পৌরসভা ১৩ বর্গকিলোমিটার ও এর আশপাশের এলাকার জনসাধারণের একমাত্র ভরসাস্থল পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত সরকারি রিজার্ভ পুকুরটি। সীমানা প্রাচীর না থাকায় এবং অবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে পুকুরের পার যাচ্ছে দখলদারদের দখলে। অযত্নের কারণে এ পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করতেও হিমশিম খাচ্ছে জনসাধারণরা। স্থানীয়রা জানান, পৌরবাসীর প্রয়োজনীয় পানির একমাত্র ভরসাস্থল এ রিজার্ভ পুকুরটি। পুকুরের চারপাশে খোলামেলা গরু ছাগল চরানো কারণে পরিবেশের পাশাপাশি পানিও নস্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে কতৃপক্ষ উদাসীন বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, ইতিমধ্যে উপজেলার ৪৭ পুকুর সংস্কারের কাজ চলমান। দ্বিতীয় ধাপে এ পুকুরটি সংস্কার করা হবে। তবে দখলদারদের হাত থেকে কুকুরটি রক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যে লাল নিশান টানানো হয়েছিল। কিন্তু দখলদাররা কিছুতেই তা মানছে না। আইনগতভাবে এ গুলোর উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে পানি সংকটের কারণে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের সম্মুখীন হচ্ছে এ উপজেলার মানুষ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে দশ হাজারের অধিক মানুষ। এ এলাকার মানুষের মধ্যে কলেরা, ডায়রিয়া, টাইফয়েড লেগেই থাকে বলে জানিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা জানান, এ পুকুরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুকুর। এখান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পানি সংগ্রহ করে থাকে। অতিশীঘ্রই এই পুকুরটি সংস্কারের জন্য কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।