পাথরঘাটা আদালত ভবন ২১ টি বিষধর সাপ
বরগুনার পাথরঘাটা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে থেকে ২১ টি বিষধর সাপের বাচ্চা ও কয়েক’শ সাপের ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আদালত ভবনে থাকা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবী, পুলিশ সহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রবিবার বেলা দেড়টার দিকে ভবনের ফ্লর ভেঙে ডিমের খোসা উদ্ধার করে স্থানীয় সাপুড়ে দুলাল। এর আগে আদালত ভবনে প্রবেশদ্বারের বিভিন্ন স্থান থেকে ২১ টি সাপের বাচ্চাগুলো মারা হয়। সাপুড়ে দুলাল জানান এগুলো বিষধর গোখরা সাপের ডিমের খোসা ও বাচ্চা।
পাথরঘাটা সিনিয়রদের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার কামাল হোসেন জানান, সকালে আদালতের কাজে অফিসে প্রবেশের সময় পায়ের কাছ থেকে একটি সাপ দ্রুত চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আরো কয়েকটি সাপ আদালত ভবনের মেঝেতে চলাচল করতে দেখা যায়। বিষয়টি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিকে জানালে তিনিও তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে এগুলো দেখে আতঙ্কিত হন। পরবর্তীতে দিশেহারা হয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ২১ টি সাপ মারা হয়।
কামাল হোসেন আরো জানান মাস খানেক আগেও আদালত চলাকালীন সময়ে বিচারকের চৌকির নিচ থেকে দুটি বড় গোখরা সাপ মারা হয়।
আদালতের আইনজীবী মঞ্জুরুল আলম জানান, পাথরঘাটায় নিজস্ব কোন আদালত ভবন না থাকায় ২০১৪ সালে মার্চ মাস থেকে পাথরঘাটা সরকারি কেএম পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি স্কুল ভবন ভাড়া করে নিয়ে সেখানে আদালতের বিচার কার্যক্রম চলছে। ভাড়া করা ভবনের অবস্থাও নাজুক। ভবনের চারদিকে দেয়াল ও পিলারে বড় রকমের ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ছে প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে এই ভবনের মেঝে থেকে কয়েক শতাধিক সাপের ফোটানো ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, বিচার প্রার্থী সকলেই আতঙ্কিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আদালতে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা বলেন, ভাবতেই ভয় লাগে যে এতো গুলো বিষধর সাপের সাথে আমারা রাত কাটিয়েছি। নিজস্ব কোনো ভবনের ব্যবস্থা না থাকায় ভবনের নিচতলায় গাদাগাদি করে হাজতখানা ও মালখানার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সহ আমাদের রাত্রি যাপন করতে হয়। এতো কাগজপত্র ও মালামালের স্তুপে কতযে সাপ রয়েছে তার অন্ত নেই। পুলিশ সদস্যরা জানান, বর্তমানে আমরা আতঙ্কিত আছি। কখন জানি কোন ধরনের বিপদ হয়ে যায়।
পাথরঘাটা সরকারি কেএম পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুর আলম বলেন, যেহেতু কয়েক’শ সাপের ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ভবনের ভেতরে সাপের বাচ্চাসহ বড় গোখরা সাপ রয়েছে। সাপুড়ে দুলালের মাধ্যমে বড় সাপটি ধরার চেষ্টা চলছে।