ধুনটের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সনদ ও গেজেট বাতিল

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ০৯:২৮ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৮

ফাইল ছবিঅনলাইন ডেস্কঃ
বগুড়ার ধুনটের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জালাল উদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৫১ তম সভায় বাতিল হওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জালাল উদ্দিনের বয়স ছিল ১০ বছর ২ মাস ২৫ দিন। তিনি জালিয়াতীর মাধ্যমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বনে যান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরকারী চাকুরি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশী প্রভাব খাটিয়ে ধুনট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্ব নেন।

মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান বলেন, জালাল উদ্দিন দির্ঘদিন কমান্ডের দায়িত্ব পালন কালে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নানা প্রকার হয়রানী করেন। নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান, মহসিন আলী জালাল উদ্দিনের এস এসসি পাশের সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করেন । এস এসসির সনদ ও ভোটার আইডি কার্ডে জালাল উদ্দিনের জন্ম তারিখ ১৯৬১ সালের ২ জানুয়ারী । সে হিসাবে ১০ বছর ২মাস ২৫ দিন বয়সী বালক কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে বিষয়টি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। জালাল উদ্দিন স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পদ আকড়ে ধরে দোর্দন্ড দাপটে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে থাকেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম জালাল উদ্দিনের বয়স জালিয়াতীর সকল প্রমান পত্র সংযুক্তকরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ, ক, ম মোজাম্মেল হকের কাছে ২০১৭ সালের ২ মে একটি অভিযোগ দেন। মন্ত্রী যাছাই করে নীতিমালা অনুসারে ব্যবস্থা নিতে ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমাজ সেবা
অফিসারকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। সমাজ সেবা অফিসার ওবাইদুল হক তদন্ত করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জালাল উদ্দিনের বয়স ১০ বছর ২ মাস ২৫ দিন এর সত্যতা পেয়ে একটি প্রতিবেদন দেন। ওই প্রতিবেদন সহ বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সুফিয়া নাজিম গত বছরের ১৪ নভেম্বর ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের সনদ বাতিল সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি পত্র প্রেরণ করেন। ওই মন্ত্রণালয়ে ৫১ তম সভায় জালাল উদ্দিনকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আখ্যায়িত করে তার সনদ ও গেজেট বাতিল করেন ।

এরপর গত ৩ মার্চ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ- সচিব মতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত জালাল উদ্দিনের সনদ ও গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

উপজেলা সমাজসেবা অফিস সুত্রে জানা গেছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ লাখ ২৬ হাজার সম্মানী ভাতা পেয়েছেন। এ ছাড়াও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে ছেলেদের সরকারী চাকুরি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ
করেছেন।

পাথরঘাটা নিউজ/এএসএমজে/২৪ মার্চ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)