বরগুনায় যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতার জামিন
বরগুনায় শামীম ইমতিয়াজ বাদশাহ নামের এক যুবলীগ কর্মী হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান।
উচ্চ আদালতের দেয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় জামিনের জন্য বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: হাসানুল ইসলামের আদালতে সোমবার জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানির সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিকুর রহমানের ভায়রা বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে সিদ্দিকুর রহমানসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারি করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইয়াসির আরাফাত।
এ সময় আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল মোতালেব এবং অ্যাডভোকেট
আবদুর রহমান নান্টু প্রমুখ।
এ বিষয়ে নিহত যুবলীগ কর্মী বাদশাহর বাবা ও এ মামলার বাদি সোহরাব মৃধা বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান হত্যার নির্দেশদাতার জামিনের খবর আমরা শুনেছি। এতে আমরা হতাশ হয়েছি। তারপরও আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে।’
আসামির স্বজনরা তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে জানিয়ে বাদশাহর বাবা বলেন, ‘আমি আমার ছেলের ন্যায় বিচারের প্রতিক্ষায় আছি। দ্রুততম সময়ে আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, ‘আমাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সিদ্দিকুর রহমানের ১০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি রাতে বুড়িরচর ইউনিয়নে কামরাবাদ এলাকায় যুবলীগ কর্মী শামীম ইমতিয়াজ বাদশাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন ৯ জানুয়ারি নিহত বাদশার বাবা সোহরাব মৃধা ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুড়িরচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এ মামলার চার নম্বর আসামি মো: রাকিব।
পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৭ জানুয়ারি বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।