বরগুনার চাঞ্চল্যকর জব্বার হত্যা : বিচারের অপেক্ষায় সাত বছর
থমকে আছে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত স্পিডবোটচালক আবদুল জব্বার খান হত্যা মামলার বিচার। হত্যাকাণ্ডের পর সাত বছরেও শুরু হয়নি বিচার কার্যক্রম। তিনবছর আগে এ মামলায় ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয়া হলেও অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারের অপেক্ষার দিন শেষ হচ্ছে না।
বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মামলার বাদী।
এদিকে চার্জশিটভূক্ত ১১ আসামী জামিনে বের হয়ে মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসামী হেমায়েত মোল্লার হুমকিতে বাদী নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন।
জানা যায়, ভিকটিম আবদুল জব্বার ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে বরগুনার বামনা উপজেলার পশ্চিম সফিপুর গ্রামের বাড়ীতে ফেরার সময় ফায়জুন্নেছা মহিলা কলেজের পেছনের সড়কে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুর্বৃত্তরা ভিকটিমের ছেলে নেছার উদ্দীনের ওপর হামলা করে। তাকে বাঁচাতে জব্বার এগিয়ে আসলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা।
বামনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেছার উত্তীন একটি পক্ষের হয়ে কাজ করায় তার ওপর এ হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় নেছার উদ্দিন বামনা থানায় চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিন বছর পর ২০১৭ সালের ২৮ মে মো. ফিরোজ আলম মহারাজ সিকদার, কামরুল হাসান আজিম, মো. মিয়াত, মো. মাসুম বিল্লাহ, মো. সাদ ইবনে ওমর, অমিত কর্মকার, মশিউর রহমান শান্ত, হেমায়েত মোল্লা, মো. রনি, পারভেজ, ওয়াসিম এবং সরোয়ার হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ।
এদের মধ্যে ওয়াসিম পলাতক হলেও বাকী আসামিরা জামিনে বেরিয়ে গেছেন।
ভিকটিমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, আসামীরা আমার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি মামলায় আপোষের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। আমরা শেষ ইচ্ছা মৃত্যুর আগে যেন স্বামী হত্যার বিচার দেখে যেতে পারি।
বাদী নেছার উদ্দীন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর সাত বছর হয়ে গেলেও নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়নি। আসামিরা বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আসামি হেমায়েত মোল্লা প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। মামলায় আপোষের জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে বিচার কাজ সম্পন্ন করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান।