বরগুনায় করোনার ভ্যাকসিন আসছে ৯২ হাজার ৯৭০
প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই দেশে আসছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এখন চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে সংক্রমণের হার ও জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় সারাদেশের কোন কোন জেলায় কত সংখ্যক ভ্যাকসিন যাবে তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বরিশালসহ দেশের ৬৪ জেলাতেই প্রথম ধাপে পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়া হবে। তবে ঢাকা জেলার জন্য রাখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ জেলায় বরাদ্দ রয়েছে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ ডোজ। সবচেয়ে কম বরাদ্দ বান্দরবান জেলায়। জেলাটিতে ৪০ হাজার ৪৩৯ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেওয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। বরিশাল বিভাগে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেয়া হবে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে এবং সিলেট বিভাগে দেয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। আগে ২৫ লাখের কথা বলা হলেও এখন ৫০ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে।
জেলা পর্যায়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকায় ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ জন, ফরিদপুরে এক লাখ ৯৯ হাজার ২০৭ জন, গাজীপুরে তিন লাখ ৫৪ হাজার ৪৬৭ জন, গোপালগঞ্জে এক লাখ ২২ হাজার ৯০ জন, জামালপুরে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৭৪৮ জন, কিশোরগঞ্জে তিন লাখ তিন হাজার ২৩২ জন, মাদারীপুরে এক লাখ ২১ হাজার ৪১৬ জন, মানিকগঞ্জে এক লাখ ৪৫ হাজার ৪৬ জন, মুন্সীগঞ্জে এক লাখ ৫০ হাজার ৫৪৪ জন, নারায়ণগঞ্জে তিন লাখ সাত হাজার ১৩ জন, নরসিংদীতে দুই লাখ ৩১ হাজার ৬৯৫ জন, নেত্রকোনায় দুই লাখ ৩২ হাজার ১৮৪ জন, রাজবাড়ীতে এক লাখ নয় হাজার ৩১৯ জন, শরীয়তপুরে এক লাখ ২০ হাজার ৩৬২ জন, টাঙ্গাইলে তিন লাখ ৭৫ হাজার ৪১৬ জন।
বরিশালে টিকা পাবেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৪২ জন, ভোলায় এক লাখ ৮৫ হাজার ২৭ জন, ঝালকাঠিতে ৭১ হাজার ৯০ জন, পটুয়াখালীতে এক লাখ ৫৯ হাজার জন, পিরোজপুরে এক লাখ ১৫ হাজার ৯২৯ জন এবং বরগুনায় ৯২ হাজার ৯৭০ জন।
বান্দরবানে ৪০ হাজার ৪৩৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৫ জন, চাঁদপুরে দুই লাখ ৫১ হাজার ৫৯২ জন, চট্টগ্রামে সাত লাখ ৯৩ হাজার ১২৯ জন, কুমিল্লায় পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ছয়জন, কক্সবাজারে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৬৮ জন, খাগড়াছড়িতে ৬৩ হাজার ৯৩০ জন, লক্ষ্মীপুরে এক লাখ ৮০ হাজার ৬৯ জন, নোয়াখালীতে তিন লাখ ২৩ হাজার ৬৬০ জন, রাঙ্গামাটিতে ৬২ হাজার ৬২ জন।
বাগেরহাটে এক লাখ ৫৩ হাজার ৭১৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭০ জন, যশোরে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৮৮৬ জন, ঝিনাইদহে এক লাখ ৮৪ হাজার ৪৫৫ জন, খুলনায় দুই লাখ ৪১ হাজার ৪৪০ জন, কুষ্টিয়ায় দুই লাখ দুই হাজার ৭৩৪ জন, মাগুরায় ৯৫ হাজার ৬৪০ জন, মেহেরপুরে ৬৮ হাজার ২৪৯ জন, নড়াইলে ৭৫ হাজার ১৫১ জন, সাতক্ষীরায় দুই লাখ ছয় হাজার ৮০৮ জন।
বগুড়ায় তিন লাখ ৫৪ হাজার ১৫০ জন, জয়পুরহাটে ৯৫ হাজার ১৫৫ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক লাখ ৭১ হাজার ৫৬৫ জন, নওগাঁয় দুই লাখ ৭০ হাজার ৭৬৮ জন, নাটোরে এক লাখ ৭৭ হাজার ৭২৫ জন, পাবনায় দুই লাখ ৬২ হাজার ৭৫১ জন, রাজশাহীতে দুই লাখ ৭০ হাজার ২৫১ জন, সিরাজগঞ্জে তিন লাখ ২২ হাজার ৫৫৭ জন।
রংপুরে তিন লাখ ২২ জন, দিনাজপুরে তিন লাখ ১১ হাজার ৩৭৭ জন, কুড়িগ্রামে দুই লাখ ১৫ হাজার ৪৮৪ জন, লালমনিরহাটে এক লাখ ৩০ হাজার ৮০৪ জন, গাইবান্ধায় দুই লাখ ৪৭ হাজার ৭৬৪ জন, নীলফামারীতে এক লাখ ৯১ হাজার আটজন, পঞ্চগড়ে এক লাখ দুই হাজার ৮৪৮ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে এক লাখ ৪৪ হাজার ৭৫২ জন।
এছাড়া হবিগঞ্জে দুই লাখ ১৭ হাজার ৫৩৮ জন, মৌলভীবাজারে এক লাখ ৯৯ হাজার ৮৪২ জন, সুনামগঞ্জে দুই লাখ ৫৭ হাজার দুজন, সিলেটে তিন লাখ ৫৭ হাজার ৬১৯ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। এসব জায়গায় প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দিতে সাত হাজার ৩৪৪টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে দুজন সরাসরি ভ্যাকসিন দেবেন এবং বাকি চারজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অন্যান্য কাজ করবেন।
আগামী ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দুদিন ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে জেলাপর্যায়ের কর্মকর্তাদের (ডেপুটি সিভিল সার্জন, ইউএইচএফপিও) প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলাপর্যায়ের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হবে ২০-২৪ জানুয়ারি এবং টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলবে ২৩-২৬ জানুয়ারি। বিভিন্ন পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের ওরিয়েনটেশন হবে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি।’