পাথরঘাটায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ
বরগুনার পাথরঘাটায় সাইক্লোন সেল্টার নির্মানে নিম্নমানের মালামাল ব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে এসটিকে এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। পাথরঘাটা সদর ইউনিয়েনের হাড়িটানা ইসলামিয়া ছালেহিয়া (হাসেমিয়া) এতিমখানা মাদরাসা বহুমুখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রেরর কাজে এ নিম্নমানের মালামাল ব্যাবহার করা হয়। ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব-ঠিকাদার মো. সালেহ এঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নে হাড়িটানা ইসলামিয়া ছালেহিয়া (হাসেমিয়া) এতিমখানা মাদরাসা ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৭ ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে মাদরাসা ভবনটি ভেঙ্গে যায়। প্রায় দীর্ঘ বছর ধরে ঝড়ার্জীর্ণ কাঠের ঘর তৈরি করে মাদরাসার শিক্ষা ব্যাবস্থা চালিয়ে আসছে। পরে স্থানীয় সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন এর সহযোগীতায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রেরর একটি ভবন বরাদ্ধ হয়।
গত ২০১৮ সালের মে মাসে পাথরঘাটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দরপত্রের (টেন্ডার) আহ্বান করলে এসটিকে এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। এ কাজে সরকারী ভাবে ২ কোটি ৫লাখ ৪০ হাজার ৮৮টাকা বরাদ্ধ করা হয়। পরে ২০১৯ সালের জুন মাসে কাজ শুরু হয়। ১২ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও প্রায় ২৪ মাসেও কাজ শেষ হয়নি। ওই ভবনের নির্মান কাজের শুরুতেই নানা অনিয়ম ধরা পরে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সত্তাধীকারী তাওহিদুল ইসলাম তদারকি কতৃপক্ষকে দেনদরবার করে আবারো কাজ করা শুরু করে। এনিয়ে মোট ৫বার ওই ভবনের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। কিছুদিন ভাল কাজ করে আবারো নি¤œ মানের কাজ শুরু করেন তারা। ওই ভবনে গত রোববার সকালে চিপ (ছোটপাথর) পরিবর্তে পচা ইটের খোয়া (রাবিশ) দিয়ে ছাদ ডালাইয়ের কাজ শুরু করলে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবহিত করে আবারো কাজটি বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় জাকির মুন্সি, কাইউম, আবুল কালাম, সাদ্দাম, বেল্লাল সরদার ও হুমায়ুন মুন্সি জানান, আমরা কাজের শুরুতেই অনিয়ম দেখে উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে ওই ঠিকাদার আমাদেরকে চাদাবাজী মামালাসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির এসে নিজেই অনিয় দেখে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে আবারো একই ভাবে ঠিকাদার সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ শুরু করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আমি উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে একাধীকবার কাজ বন্ধ করেছি। দুর্যোগের সময় যেখানে মানুষ এসে আশ্রয় নিবে সেখানেই যদি অনিয়ম হয় তবে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা চাই আমাদের এই সাইক্লোন সেল্টারটি যেন ভালভাবে নির্মান করা হয়।
এনিয়ে মাদরাসা সুপার মো. রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে কাজে কোন অনিয়ম হয়না বলে জানান তিনি।
এসটিকে এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক তাওহিদুল ইসলাম অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাইক্লোন সেল্টারের ছাদের ডাইলাইয়ে কাজে সব স্থানে এভাবেই করে, তাই আমরাও একই ভাবে করছি।
পাথরঘাটা উপজলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, অনিয়মের কথা জানতে পেরেই ইটের সুরকি গুলো সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। যতদিন চিপ (ছোটপাথর) না আসবে ততদিন কাজ বন্ধ থাকবে। এরকম অনিয়ম চলতে থাকলে তাদের বিল বন্ধ করে দেয়া হবে।