বামনা হানাদার মুক্ত দিবস আজ
আজ ২৪ নভেম্বর বামনা হানাদার মুক্ত দিবস। ওই দিন কুয়াশাছন্ন ভোররাতে বামনা থানা ভবন আক্রমণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধাদের একের পর এক গ্রেনেড আর বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয় থানা ভবনের প্রতিটি প্রান্তর। লেজ গুঁটিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা। বামনা থানার পতাকাস্তম্ভে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। ভোরের সূর্য উদীত হওয়ার পূর্বেই বামনা থানা হয় হানাদারমুক্ত।
জানা গেছে, নবম সেক্টরের সাব সেক্টর হেড কোয়ার্টার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তাঞ্চল হিসাবে এখানে জড়ো হন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জোয়ানরা। বুকাবুনিয়াতে প্রশিক্ষণ নিয়ে নবম সেক্টরের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধারা। একে একে মুক্ত করেন বিভিন্ন থানা। তেমনি ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর ভোররাতে মুক্তিকামী যোদ্ধারা পাকিস্তানিদের হাত থেকে বামনাকে মুক্ত করার জন্য থানা ভবন আক্রমণ করেন। থানার ভেতর থেকে পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী প্রচণ্ডভাবে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু অদম্য মুক্তিযোদ্ধারা থানার উত্তর দিকে আকনবাড়ির বাগান ও দক্ষিণ দিকে সারওয়ারজান হাইস্কুল ও পশ্চিমে সদর মসজিদের চারদিকে একটি বেষ্টনি গড়ে তুলে থানাকে লক্ষ্য করে তুমুল বেগে গুলি চালাতে থাকেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নায়েক আমীর হোসেন থানা ভবনের দিকে কয়েকটি গ্রেনেড ছুড়ে মারলে হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পরই পাক সেনারা আত্মসমর্পণ করে। এসময় কয়েকজন রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনা এ যুদ্ধে নিহত হয়। ওই দিনই বামনা থানার পতাকা স্তম্ভে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উত্তোলন করে বিজয় উল্লাস করেন।
বামনা থানা হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে বামনার উপজেলা শুভসংঘের বন্ধুরা স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। এছাড়াও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বামনা উপজেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।