রিফাত শরিফ হত্যায় আসামি রিফাত ফরাজীর আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজীর আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জরিমানা স্থগিত করা হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর ও ১৩ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ পাঁচ আসামির খালাস চেয়ে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত।
গত ৪ অক্টোবর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় দেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আছাদুজ্জামান।
রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি ৬ আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। বাকি ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), হাসান বন্ড (১৯)। এ ছাড়া মুসা বন্ড (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুনকে (২১) খালাস দেয়া হয়।
তবে এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মামলার অন্যতম আসামি মো: মুসা এখনো পলাতক রয়েছে।
২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে জনতার সামনে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সাথে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদি হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন রয়েছে। গত ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করার মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।