চলতি সপ্তাহে প্রথম ধাপের তফসিল ডিসেম্বরের শেষে ১৯৬ পৌরসভায় ভোট
আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু করে জানুয়ারি ২০২১-এর মধ্যে ১৯৬টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচন। বড়দিনের উৎসব বিবেচনায় রেখে প্রথম ধাপে ২৭ অথবা ২৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ করা হতে পারে। এই ধাপের জন্য দুটি তালিকা প্রস্তুত রেখেছে ইসি সচিবালয়। একটি তালিকায় রয়েছে ২৫টি পৌরসভা এবং অন্য তালিকায় রয়েছে ৪১ পৌরসভা। নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে সব পৌরসভায় নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায়। প্রথম ধাপের তালিকায় যে ২৫টি পৌরসভার নাম রয়েছে, এর মধ্যে ১১টির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী জানুয়ারিতে। আর ১৪টির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।
ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ১৯৬টি পৌরসভার সব ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর দুই দিনের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে ১৯৬টি পৌরসভার ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করেছেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন পৌরসভায় এরই মধ্যে ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ, হোসেনপুর, কটিয়াদী, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর ও ভৈরব পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গত ১০ নভেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। দাবি আপত্তি শেষে গত রবিবার এসব পৌরসভার ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী গতকাল সোমবার বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল সম্পর্কে কমিশন সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে চিন্তা-ভাবনা রয়েছে—ফেব্রুয়ারিতে যেসব পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে, সেসব পৌরসভার নির্বাচন জানুয়ারিতেই শেষ করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার সংখ্যা বেশি। তার আগে ডিসেম্বরে ১১টি থেকে ২৫টি পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হতে পারে। এবার পৌরসভা নির্বাচনে যত বেশি সম্ভব ইভিএম ব্যবহার করা হবে।’
এদিকে গতকাল রাজধানীর নির্বাচন ভবনে দেখা গেছে, নির্বাচন শাখায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পৌর নির্বাচনসংশ্লিষ্ট লোকজনের প্রচুর ভিড়। নির্বাচন ঠেকাতে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে সুপারিশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে ভিড় করছেন তাঁরা। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশের মোট পৌরসভার প্রায় ৭৫ শতাংশের নির্বাচন এক দিনে সম্পন্ন হলেও এবার তা হচ্ছে না। গত ২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্যানুসারে দেশের মোট ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে আগামী মার্চের মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে ২৬১টির। এর মধ্যে ২৬টি পৌরসভায় মামলা ও সীমানা পরিবর্তন সংক্রান্ত জটিলতায় নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। যথাসময়ে বা মার্চের আগে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে ২৩৫টি পৌরসভার। এ ছাড়া আগামী এপ্রিল বা এর পরে মেয়াদ শেষ হবে ৬৮টি পৌরসভার। এর মধ্যে আইনগত জটিলতার কারণে ১২টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা রয়েছে। ফলে ওই ৬৮টি পৌরসভার মধ্যে ৫৬ পৌরসভা বর্তমানে নির্বাচন উপযোগী। পৌরসভা আইন অনুযায়ী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।(সূত্রঃ কালের কন্ঠ)