পাথরঘাটায় শ্যালক হত্যা মামলার ময়না তদন্তের রিপোর্টে গরমিল, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
বরগুনার পাথরঘাটায় দুলাভাইয়ের মারধরে শ্যালক হত্যা মামলার ময়না তদন্তে বরিশাল ও বরগুনার রিপোর্ট দুই রকমের হওয়ায় বরগুনা সদর হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. জিকু শীলের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাজেনুর বেগম বাদী হয়ে পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করে।
মামলা সূত্র জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে মারধরে বাদীর স্বামী নুরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। পরে পাথরঘাটা থানা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠালে ডাক্তার জিকু শীল ময়নাতদন্তের জন্য পাকস্থলী, লিভার, ও কিডনি পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে ষড়যন্ত্র করে নুরুল ইসলাম মারধরে মারা গেছে এ কথা উল্লেখ না করেনি এবং কোন বিষ পায়নি বলে বোর্ড গঠন করে প্রতিবেদন পাঠায়। পরে ববিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রফেসর ডাক্তার ফাইজুল বাশারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে নুরুল ইসলাম আঘাতের কারনে ফুসফুসের রক্ত নালীতে বায়ু অনুপ্রবেশ তিব্র শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।
মামলার বাদী তাজেনুর বলেন, আমাদের সামনেই কালাম ও জাফর আমার স্বামিকে মারধর করে। তাদের আঘাতেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আমি স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক বিচার চাই।
এ ঘটনায় পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামাল হোসেন জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী সিভিল সার্জনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন কালাম পুলিশের হাতে আটক হয়ে দীর্ঘদিন জেলহাজত খেটে উচ্চ আদালতে থেকে জামিনে বের হয়। পরে মামলার আর এক আসামী জাফরকে গত ৭নভেম্বর বরগুনার সিআইডি আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল রাত পৌনে ১০টার দিকে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে নুরুল ইসলামকে (৫৫) আপন ভাই মো. কালাম ও দুলাভাই জাফর পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে লাঠি দিয়ে পেটান। পরে পাথরঘাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই দিন নুরুল ইসলামের ভাই কালামকে আটক করে পুলিশ। পরে পাথরঘাটা থানায় নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাজেনুর বেগম সাতজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।