সাংবাদিক আজিমকে জামিন দেয়নি আদালত।। অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ি উদ্ধার, শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ
বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনায় নবম শ্রেণী পড়ুয়া ১৪ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে সাংবাদিক এম এ আবদুল আজিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আদালতে জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করা হয়েছে। এক আবেদনের প্রেক্ষিতে অপহৃত শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রোববার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অপরদিকে অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটি রোববার সন্ধ্যায় বরগুনা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্স এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৪ অক্টোবর) সকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করা হলে আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন। আজিমের পক্ষে জামিন আবেদন করেন সাইফুল ইসলাম সোহাগ মোল্লা।
এদিকে আবদুল আজিম গ্রেপ্তারের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে তার অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি। অভিযোগ উঠেছে একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে তাদেরকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা। বৈধ উৎস ব্যাতিত কালো অর্থ উপার্জন, নারী দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ব্লাকমেইল, সাংবাদিকতার প্রভাব বিস্তার করে নামে বেনামে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত ঘর নির্মানের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এই দৌরাত্মের পিছনে প্রশাসনিক ছত্রছায়া ছিলো বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্স এলাকা থেকে গাড়িটি উদ্ধার করেছে বরগুনা থানার পুলিশ।
বরগুনা সদর থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, অপহৃত শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবেদন করা হলে রোববার আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে শিশুটিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অপর দুইজন আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
বরগুনা সদর থানা পুলিশ ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, বরগুনা পৌর শহরের সনাতন ধর্মাবলম্বী এক বস্ত্র ব্যবসায়ীর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে জোরপূর্বক একটি সাদা প্রাইভেটকারে (গাড়ি নং-ঢাকা মেট্রো-গ ১৭-৮২৩৪) করে শনিবার (৩অক্টোবর) রাতে নিয়ে যায় সাংবাদিক আজিমসহ কতিপয় দুর্বৃত্তরা। এসময় ২ নং সাক্ষি ডাকচিৎকার দিলে প্রাইভেটকারটি দ্রুত গতিতে বরগুনা টাউন হলের দিকে চলে যায়। এঘটনায় অপহরনের অভিযোগে তাৎক্ষনিক ঔ ছাত্রীর কাকা শুক্রবার রাতে বরগুনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ (সংশোধিত) এর ৭/৩০ ধারায় তিন জনের নাম উল্লেখ ও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সময় টেলিভিশনের বরগুনার স্টাফ রিপোর্টার মো. আবদুল আজীমকে ১ নম্বর আসামি এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গ্রাফিক্স ডিজাইনার শুভ সেন (২৬) ২নম্বর আসামি এবং একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি ইমরান হোসেন টিটুকে (২৭) তিন নম্বর আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর বরগুনা সদর থানা পুলিশ ও পটুয়াখালীর মহিপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাংবাদিক আজিমকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার গোল্ডেন ইন নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় অপহৃত ছাত্রীকেও উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে আজিমকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এঘটনায় মামলার ২ নম্বর আসামী গ্রাফিক্স ডিজাইনার শুভ সেন ও একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি ইমরান হোসেন এখনো পলাতক রয়েছে।