‘কাউয়ামুক্ত আওয়ামী লীগ’ চেয়ে পোস্টার!
ঢাকার মোহাম্মদপুরে দাঁড় কাউয়ামুক্ত আওয়ামী লীগ চেয়ে বিলবোর্ড লাগানোর কয়েকদিন পর এবার টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে ‘কাউয়ামুক্ত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন’ চেয়ে পোস্টার লাগানো হলো।
পোস্টার আরো লেখা রয়েছে- ‘কাউয়ায় করে কা কা দলের বাজে ১২টা।’ আর পোস্টারের একপাশে রয়েছে বড় একটি দাঁড় কাকের ছবি।
তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে গত বুধবার রাতে ভুঞাপুর উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে এই পোস্টারগুলো সাঁটানো হয়।
এনিয়ে এলাকায় নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তবে এই পোস্টার নিয়ে ভুঞাপুরের সর্বত্র ব্যাপক সাড়া পড়লেও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও ভুঞাপুর পৌর মেয়র মাসুদুল হক মাসুদ এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না!
জানা যায়, ভুঞাপুর উপজেলা শহরের স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন রাস্তার দেয়ালে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বুধবার রাতের কোন এক সময় তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে এসব পোস্টার লাগানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পোস্টারগুলো জনসাধারণের নজরে আসে। পোস্টারের বামপাশে বড় একটি কাকের ছবি এবং ডান পাশে লেখা রয়েছে- ‘কাউয়ামুক্ত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন চাই!’ এতে কবিতার মতো করে আরো লেখা রয়েছে- ‘কাউয়ায় করে কা কা দলের বাজে বার (১২)টা।’
ভুঞাপুরের ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের সামনের দেয়ালে সাঁটানো পোস্টার দেখে শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ রোডে আসতেই লাল রঙের একটি পোস্টার চোখে পড়ে। একটু সামনে গিয়ে দেখা যায় আরও অসংখ্য পোস্টার। শুধু কলেজ সড়কেই নয়, পুরো শহরজুড়েই এমন পোস্টার লাগানো হয়েছে।
এসব পোস্টার নিয়ে জনসাধারণের মাঝে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলেও তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে কে বা কারা এসব পোস্টার লাগিয়েছে তা জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে ভুঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকেও কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপেক্ষিত নেতাকর্মীরা এই পোস্টার লাগানোকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে- দলটি আসলে কাউয়ায় ভরে গেছে। দলে শুদ্ধি অভিযান দরকার।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও ভুঞাপুর পৌরসভার মেয়র মাসুদুল হক মাসুদ দায়সারা বক্তব্য দেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমি পোস্টারের ব্যাপারে কিছুই জানি না। পোস্টার দেখিও নাই। শুধু দুই/একজন সাংবাদিকের কাছেই শুনছি।’
জানা যায়, গত বছরের মার্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিলেটে বিভাগীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমাবেশে আওয়ামী লীগে ‘কাউয়া’ ঢুকছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘প্রচার লীগ, তরূণ লীগ, কর্মজীবী লীগ, ডিজিটাল লীগ, হাইব্রিড লীগ আছে। কথা হাছা, সংগঠনে কাউয়া ঢুকছে। জায়গায় জায়গায় কাউয়া আছে। পেশাহীন পেশিজীবী দরকার নেই। ঘরের ভেতর ঘর বানানো চলবে না। মশারির ভেতর মশারি টানানো চলবে না।’
ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের পরই সারাদেশে দলের ভিতরে-বাইরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ‘কাউয়া’। বছর না ঘুরতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফের ‘কাউয়া’ আলোচনায় চলে আসে। তবে এখন এটি আর কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য নিয়ে নয়, এবার আলোচনা হচ্ছে- রাতের অন্ধকারে শহরজুড়ে লাগানো পোস্টার নিয়ে।
এর আগে গত ১৬ ফেব্র“য়ারি ‘দাঁড় কাউয়ামুক্ত মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগ চাই’ লেখা সম্বলিত একটি বিলবোর্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ফের আলোচনায় আসে ‘কাউয়া’। এর কদিন পরেই টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে এমন পোস্টার লাগানো হলো।(সূত্রঃ নয়াদিগন্ত)