মঠবাড়িয়া পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেড় বছর ধরে বেতন বন্ধ!
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার ১৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় দেড় বছরের বেতন না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহার-অর্ধাহারে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। বছরে হাট-বাজার ইজারা, হোল্ডিং ট্যাক্স, রোলার ও ট্রাক ভাড়াসহ ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন বকেয়া থাকা নিয়ে নানান প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মাঝে আবার সম্প্রতি মাস্টার রোলে দুইজন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন পৌর মেয়র। এ কারণে অনেকেই অন্যত্র বদলী, আবার চাকরি কেউ কেউ চাকুরী ছেড়ে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন। ১৯৭৭ সালের পৌর অধ্যাদেশে রাজস্ব আয় থেকে সর্ব প্রথম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করার কথা বলা হলেও পৌর মেয়র রফিউদ্দিন উদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস পৌর অধ্যাদেশের ওই নীতিমালা মানছেন না।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে মঠবাড়িয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর একজন সচিব ও একজন প্রকৌশলীসহ ৩০ জন কর্মকর্তা- কর্মচারী নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৮ সালে এটি দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার সাথে সাথে বিপুলসংখ্যক জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী, সচিবসহ ৬৬ জন কর্মকর্তা ও ৭৫ জন পরিচ্ছন্ন-পাহারাদারকর্মী রয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় পৌরসভাটি চলছে যেমন খুশি তেমন সাজোর মত। পৌর মেয়র ক্ষমতাসীন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় কেউ তার এ অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারীতেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পৌরসভার কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও তাদের বেতন মিলছে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (নগর উন্নয়ন-২) শায়লা ফারজানা পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌসের সাথে গত ২৫ আগস্ট ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কথা বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৭ মাসের বেতন পরিশোধ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ডিসেম্বরের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হলে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে নামিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি এ ঘোষণা দেন। মঠবাড়িয়া পৌরসভা সচিব মো. হারুন-অর-রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পৌরসভার সচিব হারুন-অর রশীদ জানান, প্রতিবছর ১৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বিল আসে সাড়ে ৩ কোটি টাকা আর হাট-বাজার ইজারাসহ পৌরসভার রাজস্ব আয় হচ্ছে ৫ কোটি টাকা। বর্তমানে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ১৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৭ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
এ বিষয়ে আজ শনিবার সকালে মঠবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের সাথে একাধিক বার তার (০১৭২৪৭২৬১৯৫) নম্বর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন।’