বরগুনা থেকে ঢাকাগামী সাতিল আরব লঞ্চে ডাকাতির চেষ্টা
বিশেষ প্রতিনিধি: বরগুনা থেকে ঢাকাগামী এ রুটের নতুন লঞ্চ এম ভি সাতিল আরব লঞ্চে ডাকাত দল হানার চেষ্টা চালিয়েছে।গত সোমবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাতে ডাকাতির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
বিষয়টি পাথরঘাটা নিউজকে নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যাত্রী।এছাড়াও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন লঞ্চে থাকা আরেক যাত্রী বরগুনার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন।
বরগুনার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন পাথরঘাটা নিউজকে জানান, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে বরগুনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এম ভি আরব নামক লঞ্চে ৩ জন পুলিশকে নিয়ে যাত্রী হিসেবে উঠি। রাত ২টায় লঞ্চ যখন মেঘনা নদীতে তখন এসআই আলমগীর ফোন করেন জানান, স্যার ৩টি ট্রলারে করে ৩০/৩৫জন লোক ৪০ মিনিট যাবত লঞ্চের খুব কাছে থেকে ফলো করছে।বলার পরও তারা সরে যাচ্ছে না।স্যার আপনি একটু আসলে ভাল হয়।পরে যেয়ে দেখলাম ওরা খুব কাছে চলে এসেছে।৩ পুলিশ বন্দুক তাক করে আছে ওদের দিকে।বিন্দুমাত্র বিচলিত নয় লোকগুলো, উল্টো মনের সুখে সিগারেট টানছে ওরা। অর্ডার দিলাম,ওরা লঞ্চে উঠার চেষ্টা করলে গুলি করবেন।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বরগুনা পুলিশ সুপার বিজয় বসাক,বিপিএম,পিপিএম মহোদয়কে জানালাম আর ৯৯৯ এ কল দিলাম।তিনি চাঁদদপুর নৌ পুলিশকে বলেন আমার সাথে যোগাযোগ করতে।তখন একের পর এক ফোন আসতে থাকে। তারা আমার কাছে জানতে চায়, স্যার আপনারা কোথায় আছেন?লঞ্চের নাম কি? তখন গুগল ম্যাপ বলে চাঁদপুর থেকে ১১কিলো দক্ষিণে। এর আগে সবাইকে জাগিয়ে তুললাম ও সমস্ত লাইট জ্বালাতে বললাম।লঞ্চের যাত্রীরা সবাই আতংকে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর চাঁদপুরের কাছাকাছি আসলে নৌ পুলিশের টহল দল লঞ্চে উঠেন এবং চাঁপুরে লঞ্চ ভিড়ান।দুষ্কৃতকারীরা/ডাকাতরা পালিয়ে যায়।চাঁদপুর থেকে আরো পুলিশ উঠে যাত্রীদের আস্বস্ত করেন।পরে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও আবারও পিছু নেয় ৩টি ট্রলার।আবারও পুলিশকে দিয়ে বন্দুক তাক করাই ও লোকজনকে জাগাই। বুঝতে পেরে আমাদের লঞ্চের পিছু ছেড়ে বিপরীতগামী একটি মালবাহী কার্গো কে ৩টি ট্রলার ঘিরে ধরল।আবারও নৌ পুলিশকে ফোন দিলাম।কার্গোর ভাগ্যে কি ঘটেছে জানা যায় নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, সরকারি কাজের জন্য ঢাকা উদ্দেশ্যে লঞ্চের যাত্রী ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ।তাই আজ আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল।ম্যাজিস্ট্রেট স্যার ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষের আচরন আমাদের কাছে সন্দেহ জনক ছিল।ম্যাজিস্ট্রেট স্যার যখন তার পরিচয় দিয়ে লঞ্চের চালককে বাতি জ্বলাতে বলেন তখন তার কথা লঞ্চ চালক শোনেন নি।উল্টো তাকে তার কেবিনে যেতে বলেন।পরে চাঁদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ লঞ্চে উঠে লঞ্চের মালিক পক্ষকে শাসিয়ে যায়।
অপর এক যাত্রী বলেন, এ নিয়ে সাধারর যাত্রীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।আজ লঞ্চে পুলিশ না থাকলে না জানি কি হয়ে যেত।
এন এ এস / পাথরঘাটা নিউজ