ঝালকাঠিতে মিলল ২০ বছর আগের অক্ষত লাশ
২০০০ সালে ৭৫ বছর বয়সে মারা যান মো. মোজাফফর আলী। সেই সময় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল। তবে নদী তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়ে তার কবরটি। কিন্তু ২০ বছর আগে দাফন করা সেই মোজাফফর আলীর লাশ মিলল অক্ষত।
মঙ্গলবার বিকেলে অলৌকিক এ ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভাটারাকান্দা গ্রামে। পুনরায় ওই মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
মোজাফফর আলীর বড় ছেলে আবুল বাশার বাদশা বলেন, ভাটারাকান্দা গ্রামটি বিষখালী নদী তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায় আমাদের ঘরবাড়ি। একইসঙ্গে ভাঙনের কবলে পড়ে বাবার কবরটিও। পরে বৈদারাপুর গ্রামে আমরা বাড়ি তৈরি করি। এরইমধ্যে ছোট ভাই বাদল কুয়েত মেডিকেল কোরে কর্মরত অবস্থায় একাধিকবার বাবার কবর বিলীন হওয়ার বিষয়টি স্বপ্ন দেখে। পরে আমাকে বিষয়টি জানায় বাদল। সোমবার রাতে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বাবার কবর স্থানান্তরের জন্য পারিবারিকভাবে আলোচনা করা হয়।
পরিবারের সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাবার কবর স্থানান্তরের জন্য মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী সাইফুলকে নিয়ে কবরের কাছে যাই। কবর খুঁড়তেই সাদা কাপড় দেখতে পাই আমরা। একপর্যায়ে অক্ষত মরদেহ দেখে ভয় পেয়ে যাই। পরে মরদেহ বৈদারাপুর গ্রামের নতুন বাড়িতে নেয়া হয়। ২০ বছর পরও বাবার মরদেহ অক্ষত দেখে সবাই হতভম্ব হন।
বাদশা আরো বলেন, আমার বাবা অনেক পরহেজগার ছিলেন। মরদেহ কবর থেকে তোলার পর দেখি কাফনের কাপড়ও পচেনি। ধরে দেখি কাপড়ের ভেতরে শুকনো দেহ রয়েছে। প্রতিটি হাড়ের জোড়া শক্ত। হাত-পায়ের জোড়া বিচ্ছিন্ন হয়নি। সকালে উদ্ধার কাজ শেষ করে বৈদারাপুর গ্রামের নতুন বাড়িতে নেয়া হয় মরদেহ। নতুন বাড়িতে মায়ের কবরের পাশেই মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে তাকে পুনরায় দাফন করা হয়।
এদিকে ২০ বছরে মরদেহ কবরে অক্ষত থাকার খবর শুনে ওই বাড়িতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। শুধু এলাকাবাসী নয় দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে মরদেহটি দেখতে আসেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাকির হোসেন বলেন, ভাটারাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর আলীর মরদেহ অলৌকিকভাবে ২০ বছর পর অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে ধর্মীয় রীতি মেনে বৈদারাপুরের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।