কেন বারবার ভাঙছে পাথরঘাটার পদ্মার ভাঙ্গন এলাকা, জানুন আসল রহস্য
বলেশ্বর ও বিষখালি নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রভাবে উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পদ্মা ভাঙ্গন এলাকার বেরিবাঁধের ৫টি পয়েন্ট ভেঙ্গে ১০ গ্রামে প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে এ ভাঙ্গন দেখা দেয়।
এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে মাছের ঘের সহ ফসলি জমি। এছাড়াও অতিবর্ষণ ও অমাবস্যার জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার তিনটি প্রধান নদী বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, সিডরের ভেঙ্গে যাওয়া পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পদ্মার এলাকার বেরিবাঁধ টি বার বার নামেমাত্র সংস্থার করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ এলাকার মানুষ। ২০০৭ সালের সিডরের পরে থেকে পদ্মা রুহিতা এলাকায় ২ কিলোমিটার ওয়াপদার রাস্তা নদীভাঙনে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন সময় নামেমাত্র একের পর এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসে বেরিবাঁধ ঠিক করার জন্য। কিন্তু কয়েক দিন কাজ করার পরে আবার কাজ বন্ধ হয়েছে যায়। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ঠিকই অর্থ তুলে নিয় যায়। আর এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার মানুষের দুর্দশা আর লাঘব হয় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা কালাম মাঝি, মনির গাজী, আব্দুল মালেক, জাহিদ হাসান, আলমগীর হোসেন, সেলিম সরদার। তারা জানান কাজের অনিয়মগুলো নিয়ে প্রতিবাদ করলে মামলার ভয় দেখিয়ে সকলের মুখ বন্ধ রাখে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। নাম প্রকাশ করা না শর্তে একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান স্থানীয় প্রভাবশালীরা পার্সেন্টিসের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে যোগসাজশ করে কাজে অনিয়ম করে যাচ্ছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় তাদের মনে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আতঙ্কও কাটে না।
বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, অতিবর্ষণ ও অমাবস্যার প্রভাবে এ জেলায় ৪৫০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাইছার আলম আমাদের সময়কে জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমনের সাথে যোগাযোগ করে পধ্মা ভাঙ্গনের মেরামতের কাজ চলছে। তবে পানির চাপ অতিরিক্ত থাকার তাদের কাজে ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, অতিবৃস্টি, আমাবস্য প্রভাব ও লগুচপের বাতাসের কারনে হঠাৎ পানি বেড়ে গেছে তাই এই ভাঙ্গন হয়েছে।