পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে
জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলেও উন্নতি হয়নি জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি অবস্থায় তারা। এখনো চরম দুর্ভোগে রয়েছে জেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ। বন্যা দুর্গত এলাকায় খাদ্য সংকটসহ ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ-বালাই।
গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ২৩ সেন্টিমিটার কমে মঙ্গলবার সকালে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ও একই সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ইতিমধ্যে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বন্যায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, জামালপুর জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভায় ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০৭ জন পানিবন্দি রয়েছে। সবমিলিয়ে জেলায় ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৪টি পানিবন্দি পরিবারের মাঝে সরকারি ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ৯৫৯টি পরিবারকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, আর আশ্রিত এসব মানুষের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৮৪ জন।
বাকি প্রায় দশ লাখ মানুষ সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন বাঁধ, উচু সড়ক, রেলস্টেশনের প্লাটফর্মসহ খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে আছে।
অপরদিকে, মহামারী করোনা আর এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বন্যায় কাজকর্ম না থাকায় উপার্জনহীন অবস্থায় দুর্গত এলাকায় ঘরে ঘরে খাদ্য সংকট চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৫১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৪ লাখ টাকা, ৭ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২ লাখ টাকার শিশু খাদ্য এবং ৬ লাখ টাকার গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্গত এলাকায় ভিজিএফের চাল বিতরণ করছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়া, চলতি বন্যায় ৫ হাজার ৯৭টি নলকূপ এবং ৬ হাজার ২৯৫টি ল্যাট্রিন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ সুপেয় পানির সংকটসহ প্রাকৃতিক কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সেইসাথে দীর্ঘদিন ধরে বন্যার পানিতে অবস্থান করায় বন্যাকবলিতদের মাঝে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। জামালপুর স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।