এক নজরে দেখে নিন করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে কে কত এগিয়ে
করোনাভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অন্তত ১০টি দেশে চলছে ১৭০টিরও বেশি প্রচেষ্টা। তবে এর মধ্যে এখন পর্যন্ত তিনটি পৌঁছাতে পেরেছে পরীক্ষার শেষ ধাপে।
পৌনে দুইশ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ জুলাইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে ১৭৩টি উদ্যোগ। একেকটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-পর্ব সারতেই সাধারণত বছরের পর বছর সময় লাগে।
তবে কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে তা ১২ থেকে ১৮ মাসে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্ব
বেশিরভাগ প্রচেষ্টাই এখনেও প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে। এই ধাপে বিজ্ঞানীরা ভাইরাস বা তার কোনেও একটি অংশ তৈরি করেন। সেটি অন্য প্রাণীদের উপর প্রয়োগ করে দেখেন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকঠাক সাড়া দিচ্ছে কিনা।
১৪০টি প্রচেষ্টা এখনও এই ধাপে আটকে আছে।
প্রথম ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রথম ধাপে সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়। দেখা হয়, প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্বে পশুর দেহে যেভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, মানুষের শরীরেও তা একইভাবে কাজ করছে কিনা। বর্তমানে ১৯টি টিকা রয়েছে এই ধাপে।
দ্বিতীয় ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছাতে পেরেছে ১১টি ভ্যাকসিন।
সম্ভাব্য ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ আর তা কী মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে, এই ধাপে মূলত সেটি দেখেন বিজ্ঞানীরা। এজন্য কয়েকশ’ মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা করা হয়।
তৃতীয় ধাপ
তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষার আওতায় আসেন কয়েক হাজার মানুষ। কার্যকারিতা, শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকগুলোতে এই পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা মনযোগ দেন। এই ধাপটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর মাত্র তিনটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পৌঁছাতে পেরেছে। এরপর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তা বাজারজাত করার অনুমোদন দেয় দেশগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
চীনের দুটি
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে পৌঁছানো তিনটি ভ্যাকসিনের দুটিই চীনের। এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে টিকা তৈরি করেছে সাইনোভেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক ধাপগুলো অতিক্রম করে এর তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে ব্রাজিলে। ক্যানসাইনোর নামের প্রতিষ্ঠানের অন্য ভ্যাকসিনটিরও দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে সামরিক বাহিনীকে তা পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীন।
আলোচনায় অক্সফোর্ড
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু থেকে আলোচনায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে তারা। পৌঁছে গেছে তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন পরীক্ষার শেষ ধাপে। দক্ষিণ আফ্রিকা আর ব্রাজিলে চলছে এ ট্রায়াল।
দৌড়ে মডার্না
শেষ ধাপের এই দৌড়ে নতুন করে যোগ দিচ্ছে মার্কিন কোম্পানি মডার্না। যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজার মানুষের ওপর ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছে তারা। ট্রায়াল পর্ব শুরু হচ্ছে চলতি মাসেই। এই গবেষণাটি ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য তাদের। তবে তার আগেই প্রাথমিক ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। (তথ্য সূত্র: ডয়েচে ভেলে)