বামনায় ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা মানসিক প্রতিবন্ধী নারী, ধর্ষক গ্রেফতার
বরগুনার বামনা উপজেলার কালিকাবাড়ী গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী (৩৮) ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত রোববার রাতে অভিযুক্ত হাশেম মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। তিনি একই গ্রামের মৃত লালু মল্লিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই নারী সারাদিন এলাকার বিভিন্ন জায়গায়, হাট-বাজারে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালান। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে প্রায় ছয় বছর আগে কালিকাবাড়ী গ্রামের মো: জালাল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন এবং পরে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে ছেলেটির বয়স পাঁচ বছর। ওই ঘটনার পর থেকে জালাল পলাতক রয়েছেন।
এলাকার লোকজন চাঁদা দিয়ে ওই শিশুটিকে বাঁচান। এবং ওই নারী ও শিশুটির কথা ভেবে বছরখানের আগে অভিযুক্ত হাশেম মল্লিকের একটি পরিত্যক্ত কাঠের ঘরে থাকতে দেন। এ সুযোগে হাশেম মল্লিক ওই নারীকে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করেন। এতে আবারো অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। বিষয়টি হাশেম মল্লিকের পরিবারের লোকজন জানতে পেরে গর্ভের বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ খবর পেয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং ধর্ষককে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে ওই নারী জানান, ‘আমি হাশেম মল্লিকের একটি পরিত্যক্ত কাঠের ঘরে আমার এই ছেলেটি নিয়ে থাকতাম। সে প্রায় সময়ই সন্ধ্যার পরে তার বাগানের পিছনে ছাগলের জন্য কাঁঠাল পাতা পারতে আসত। এ সময়ে সে ঘরের মধ্যে ঢুকে আমাকে চেপে ধরে, অনেক সময় সে আমার ছেলেকে বাদাম দিয়ে আমার সাথে কাজ করত। আমাকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা করেছে হাশেম মল্লিক। আমি কি এর বিচার পামু না?’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করি। হাশেম মল্লিকের পুত্রবধূরা এসে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। ঘরের মধ্যে আমার কম্বল, কাঁথা আছে, আমি কোথায় ছেলেরে নিয়া ঘুমাব, আমার পেটের সন্তান কি বিচার পাবে না?’ এই বলে কাঁদতে থাকেন প্রতিবন্ধী ওই নারী।
এ বিষয়ে বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস তালুকদার জানান, ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে বামনা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে রাতেই গ্রেফতার করে বামনা থানায় এনেছি এবং ভিকটিমকে বামনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আসামিকে বরগুনা আদালতে পাঠানো হবে।