আগামীকাল থেকে খুলবে অফিস, চলবে গণপরিবহনও
আজ শনিবার (৩০ মে) শেষ হচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত টানা ৬৬ দিনের ছুটি। এটিই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা ছুটি। এ ছুটির অবসানের ফলে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামছে গণপরিবহনও (বাস, লঞ্চ, ট্রেন)।
১৫ জুন পর্যন্ত অফিস, গণপরিবহনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে, সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রম অবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছিল। তবে এটি আর না বাড়ানোয় এখানেই শেষ হচ্ছে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে লম্বা এ ছুটি।
দীর্ঘ ছুটির কারণে ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমেছে। কষ্টে পড়েছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। তাই এখনও করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতির দিকে না থাকলেও জীবিকা ও অর্থনৈতিক কারণে ছুটির পথ থেকে সরে এসেছে সরকার।
অফিস খোলার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক আদেশে বলেছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এ সময়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে বন্ধ থাকা বাস, লঞ্চ, ট্রেন চালুর নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধি-নিষেধ নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
সড়কে গণপরিবহন চালাচলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ১৩টি কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে। অপরদিকে যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচলের বিষয়ে ১৪টি করে ও বিমান চলাচলের বিষয়ে ১০টি কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সড়ক পরিবহন ও যাত্রীবাহী নৌযান খাতের মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে শুক্রবার (২৯ মে) সভায় বসেছিল সরকার। দুই সেক্টরের মালিকরাই ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। বাস ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত না হলেও লঞ্চ ভাড়া আপাতত বাড়ছে না বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সভায় আগামীকাল (৩১ মে) থেকে রাস্তায় নামতে যাওয়া গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখতে বলেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। অপরদিকে ভাড়া না বাড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চেও যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান।