এইচএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ঈদের পর
এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় আছে দেশের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী। গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় এখনো এ পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা করতে পারছে না শিক্ষা বোর্ড। এ অবস্থায় দীর্ঘ মেয়াদের সেশন জটেরও আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাই আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর পরীক্ষা গ্রহণের সম্ভাব্য কোনো তারিখ ঘোষণার বিষয়ে চিন্তা করছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার থেকে দেশের সব ক’টি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে শুরু হচ্ছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, আপাতত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রেজাল্ট তৈরির কাজকেই অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এর পর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ঈদের পর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার নতুন সময়সূচি নিয়ে বৈঠক করে তা প্রকাশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত ২২ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পরীক্ষার মাত্র ৯ দিন আগে জরুরি ঘোষণায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। যদিও ১ এপ্রিল এ পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, করোনার কারণে পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হলো। তবে ওই ঘোষণার সাথে এটিও জানানো হয়েছিল যে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ জানানো হবে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষার নতুন সময়সূচি পরে আর প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক গতকাল বুধবার নয়া দিগন্তকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠান করা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভালো না হলে এ পরীক্ষা আয়োজনে অনেকটাই স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। কেননা এ পরীক্ষার সাথে শুধু ১২ লাখ শিক্ষার্থী জড়িত নয়, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, পরীক্ষক, আনসার গার্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি ঈদের পর বৈঠক করে কবে নাগাদ পরীক্ষা আয়োজন করা যায় সে সিদ্ধান্ত নেবো।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের জন্য স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা ঈদুল ফিতরের পর আয়োজন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। সবগুলো শিক্ষা বোর্ডের প্রস্তুতিও সেভাবে নেয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় এখন এ পরীক্ষা আয়োজন আরো কিছু দিন বিলম্ব হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। ইতোমধ্যে করোনার বিস্তার রোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর সারা দেশের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।