বরগুনায় ভাড়া না পেয়ে ভাড়াটিয়ার চাল নিয়ে গেলেন ঘর মালিক
বাসা ভাড়ার ১৫শ টাকা দিতে না পারায় বরগুনায় এক বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়ার ঘরের চাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও ঘর ওই মালিকের দাবি ‘ঘর ভাড়া দিতে না পারায় ভাড়াটিয়া নিজেই ভাড়ার বিনিময়ে চাল দিয়েছেন।’
তবে ভাড়াটিয়ার অভিযোগ ‘চলমান এই লকডাউনে কর্মহীন থাকায় অসয়াত্বের সুযোগে জোর করে ঘর থেকে চাল নিয়ে গেছেন মালিক।’
মঙ্গলবার দুপুরের বরগুনার সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের মহাসড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ঘর মালিকের নাম সরোয়ার মোল্লা। তিনি গৌরিচন্না ইউনিয়নের বাসিন্দা। আর এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়ার নাম ফারুক। তিনি বরগুনার একজন বাসচালক।
ভাড়াটিয়া ফারুক বলেন, লকডাউনে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আমি কর্মহীন হয়ে পড়ি। এজন্য আমার ভাড়া বাসার মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের ১৫শ টাকা করে মোট তিন হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হই। এর মধ্যে ঘর মালিকের কাছে অগ্রিম ১৫শ টাকা ভাড়া দেয়া ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে বাকি এক মাসের টাকার জন্য তিনি আমার বাসায় আসলে আমি আমার অসয়াত্বের কথা তাকে বলি।
এ সময় তাকে জানাই আমার ঘরে চাল ছাড়া আর কিছু নেই। পরে ঘর ভাড়ার ১৫শ টাকা না পেয়ে আমার সেই একমণ চাল তিনি নিয়ে যান। তবে চালের দাম ১৬শ টাকা নির্ধারণ করে একশ টাকা ঘর মালিক তাকে ফেরত দিয়ে যান বলেও জানান ফারুক।
এ বিষয়ে ঘর মালিক সরোয়ার মোল্লা বলেন, ভাড়াটিয়া ফারুক স্বেচ্ছায় ঘর ভাড়ার পরিবর্তে আমাকে চাল দিয়েছে। তাই আমি চাল নিয়েছি। ঘর ভাড়া কিংবা ভাড়ার পরিবর্তে চাল নেয়ার জন্য আমি তাকে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করিনি।
এ বিষয়ে বরগুনার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া বাসচালক ফারুকের সঙ্গে যা ঘটেছে এর থেকে নির্মম আর কিছু হতে পারে না। আমরা এ ঘটনায় অভিযুক্ত ঘর মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, বাসা ভাড়ার পরিবর্তে ভাড়াটিয়ার ঘরের চাল নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তাই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি আমরা। সত্যতা পেলে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য ঘর মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, জেলাজুড়ে আমাদের খাদ্য সহায়তা কর্যক্রমসহ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান চলমান রয়েছে। বাসচালক ফারুকসহ অন্য চালকদের সহায়তায় বরগুনা জেলা প্রশাসন এগিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।