মঠবাড়িয়ায় মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ১ মে ২০২০

ছবিঃ পাথরঘাটা নিউজমঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দরিদ্র নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যপারে উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী দশ গৃহবধূ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব,মহিলা দপ্তরের অফিস সহকারী ও ইউপির নৈশ প্রহরীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইউএনও অভিযোগের বিষয়টি দ্রুত তদন্তের উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সচিব আশুতোষ হালদার,মহিলা দপ্তরের অফিস সহকারী মারুফউজ্জামান,ইউপির কম্পিউটার অপরেটর ফাতিমা আক্তার ও নৈশ প্রহরীর স্ত্রী মিনারাসহ এক নারী ইউপি সদস্য মিলে এলাকার দরিদ্র নারীদের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য বই করে দেওয়ার কথা বলে ৩০ জন গর্ভবতী নারীদের কাছ থেকে জন প্রতি দুই হাজার থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে দুই বছরে ৩০ জন অতি দরিদ্র গর্ভবতী নারীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠছে এ চক্রটির বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে গর্ভকালীন ভাতার বই দেওয়ার নামে পশ্চিম সেনের টিকিকাটা গ্রামের সোনিয়া বেগমের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, মহিমা বেগমের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা, মানসুরা খাতুনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, সাহানা বেগমের কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা, সুমি বেগমের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা, তাজনুর বেগমের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা, সুমি বেগমের দুই হাজার, মহিমা বেগমের দুই হাজার ও আসমা বেগমের কাছ থেকে এক হাজার টাকা,হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা জানান-গত প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হলেও কেউ এখনো ভাতার বই পাননি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ভুক্তভোগীরা ভাতা বই না পেয়ে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন ।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ সুমি বেগম জানান, ভাতার বই করে দেওয়ার নামে তিন বছর আগে তার কাছ থেকে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরে কর্মরত মারুফ হোসেনকে টাকা দিতে হবে বলে দুই হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা দীর্ঘদিনেও বই করে দিতে পারায় টাকার জন্য চাপ দিলে প্রতারিত গৃহবধূকে কয়েক দফায় হুমকি ধুমকি দেয়া হয়।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মহিলা ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। তবে মহিলা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী মারুফ উজ্জামানকে ভাতার জন্য এক মহিলার কাছ থেকে এক হাজার টাকা এনে দিয়েছি বলে স্বীকার করেন। অন্য কোনো বিষয়ে আমার সাথে কারো ঝামেলা নেই।ইউনিয়ন পরিষদের নৈশ প্রহরী আ রাজ্জাকের স্ত্রী মিনারা বেগম অভিযোগ অস্বীকারকরে বলেন চার জন ভাতা ভোগীর কার্ডের কাগজ পত্র অফিসে জমা দেয়ার কথা স্বীকার করেণ।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস সহকারী মারুফ উজ্জামান ও ইউপি সচিব আশুতোষ হালদার তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত করছে বলে দাবী করেণ।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভাতার তালিকার নামে অর্থ নেওয়া বেআইনী। বিষয়টি তদন্তের জন্য আগামী ৭ মে সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত হতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উর্মি ভৌমিক বলেন, এ অভিযোগের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)