তালতলী চাচার সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হল ভাতিজার ঘর

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১১:৫৬ এএম, ১৬ এপ্রিল ২০২০

এই ছবিটি ইন্টারনেট থেকে নেয়াআমতলী প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামে চাচা তৈয়ব আলী বয়াতির সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করে ঘড় ভাংচুরের পর থানায় অভিযোগ জানালে দ্বিতীয় দফায় আগুন দিয়ে পুরিয়ে ফেলে ভাতিজা সাইদুর রহমান বয়াতির বসত ঘর। কেটে ফেলেছে ছয় শতাধিক গাছ। সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাইদুর ও তার পরিবার এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ সাইদুর রহমান বয়াতির। ঘটনা ঘটেছে তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামে মঙ্গলবার রাতে।

জানাগেছে, উপজেলার কলারং গ্রামের সাইদুর রহমান বয়াতির সৎ চাচা তৈয়ব আলী বয়াতির সাথে দীর্ঘদিন ধরে ৫২ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আদালতে মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে চাচা তৈয়ব আলী বয়াতির (৫৫) নেতৃত্বে জামাল হাওলায়ার (৪০),

তুহিন হাওলাদার (১৮) ও নুরুল হকসহ (৪৫) মাস্ক পরিহিত ১০-১২ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাইদুর রহমানের বাড়ীতে প্রবেশ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। সাইদুর দৌড়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। পরে সন্ত্রাসীরা সাইদুরের বসত ঘর কুপিয়ে ঘড় ভাংচুরের পর ঘড়ে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং তার বাগানের ৫ শতাধিক কলাগাছ ও শতাধীক রেইন্টিসহ চাম্বল গাছ কেটে ফেলে তারা। দ্বিতীয় দফা ফের ওই বাড়িতে হামলা করে আগুন দিয়ে ঘড় পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।

এ ঘটনায় সাইদুর রহমান বয়াতি ওইদিন সন্ধ্যায় চাচা তৈয়ব আলী বয়াতিকে অভিযুক্ত করে ১২ জনের নামে তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এদিকে থানায় মামলা করার খবর পেয়ে চাচা তৈয়ব আলী বয়াতি ওই দিন রাতেই ভাতিজা সাইদুরের ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। চাচার সন্ত্রাসী বাহিনীর দেয়া আগুনে সাইদুরের সমুদয় ঘর পুড়ে যায়। খবর পেয়ে তালতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এদিকে সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাইদুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ী ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

সাইদুর রহমান বয়াতি অভিযোগ করে বলেন, আমাকে ও তার পরিবারকে এলাকা থেকে উৎখাত করার জন্য চাচা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার ঘর ভাংচুর,লুটপাট ও গাছ কেটে ফেলেছে। চাচার সন্ত্রাসী বাহিনিী আমার গাছ কেটেই খ্যান্ত হয়নি, থানায় মামলা দেয়ার খবর পেয়ে আমার ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আমি তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, মাস্ক পরিহিত ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এসে সাইদুলের বাড়ীতে প্রবেশ করে সাইদুলকে ধাওয়া করে। পরে সন্ত্রাসীরা সাইদুলের ঘর ভাংচুর করে মালামাল নিয়ে যায় এবং বাগানের কলাগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলে। তারা আরো বলেন, রাতে আগুনে সাইদুলের ঘরে পুড়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল্লাহ হাওলাদার বলেন, তৈয়ব বয়াতিসহ ১০-১২ জন লোক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সাইদুলের ঘর কুপিয়েছে এবং তার বাগানের কয়েকশত গাছ কেটে ফেলেছে। স্থানীয় আতাউল্লাহ বলেন, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আগুনের খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সাইদুলের ঘর পুড়ে গেছে। কে আগুন দিয়েছে তা আমরা জানিনা।

এ বিষয়ে চাচা তৈয়ব আলী বয়াতি মুঠোফোনে ঘরে আগুন দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে মন্দকথা বলায় আমার নাতিরা কলাগাছ কেটে ফেলেছে। তিনি আরো বলেন, সাইদুল নিজেই তার ঘর ভাংচুর করে পুড়িছে।তালতলী থানার এসআই মোঃ জাকারিয়া বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় তৈয়ব বয়াতির লোকজন কলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেছে। তিনি আরো বলেন, তদন্ত করে আসার পর ঘরে আগুন দেয়ার কথা শুনেছি।তালতলী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)