পাথরঘাটায় জেলেদের ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়ম, ইউওনোর গতিরোধ করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
=”accelerometer; autoplay; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture” allowfullscreen>
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নে জেলেদের ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির তদন্তে গেলে তার পথরোধ করে বিক্ষোভ করে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে এলাকাবাসী। এ সময় চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর বিচার দাবি করে তারা। তখন ইউওনোর সাথে উপস্থিত ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান, সহকারী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার)।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান কাকচিড়া ইউনিয়নের কার্ডধারী ৫৫০ জন জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ এর ৪৪ টন চাল গ্রহণ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। যা প্রতি জেলেকে দুমাসের জন্য ৮০ কেজী করে বিতরণ করার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে প্রতি জেলেকে ৩০ কেজী করে বিতরণ করেছে।
তদন্তে আসা পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু চাল বিতরণ ব্যপকভাবে অনিয়ম করেছে। তার এলাকায় বরাদ্দকৃত ৪৪ মেট্রিকটন চালের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১৬ মেট্রিকটন চাল বিতরণের সঠিক প্রমাণ দিতে পেরেছে। বাকি সাড়ে ২৭ মেট্রিকটন চাল বিতরণের কোন সঠিক প্রমাণ দিতে পারেনি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য জানান, কোন ধরনের মিটিং ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে চেয়ারম্যান পরিষদ পরিচালনা করে। আমরা যখন পরিষদে আসি তখন আমাদের সামনে সাদা রেজুলেশনের খাতা দিয়ে সাক্ষর করতে বাধ্য করে।
মহিলা ইউপি সদস্য সোনিয়া আক্তার জানান, হঠাৎ করে রাতে চেয়ারম্যান ফোন দিয়ে বলে আপনি ৪০ জনের নামের তালিকা দেন সকালে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করবো। তখন কোন মতে তাকে নামের তালিকা দেই। কিন্তু পরদিন সকাল ৭ টায় পরিষদে এসে দেখি চাল বিতরণ করা শেষ। একই অভিযোগ করেন ইউপি সদস্য মিলন মেম্বার ও সালমা মেম্বার।
স্থানীয় আলম পহলান জানান, শুধু ভিজিএফের চাল নয়! কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদে যত ধরনের সহায়তা আসে তার সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি করে এই চেয়ারম্যান। এর বিরুদ্ধে এর আগেও বহুবার পত্র পত্রিকায় ও টিভিতে নিউজ হয়েছে।
ভিজিএফ চাল বিতরণে দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) রনজিৎ মিস্ত্রী জানান, চাল বিতরণের কোন খবর আমার কাছে নেই। যেখানে চাল বিতরণের একদিন আগে আমাকে পরিষদ থেকে অবহিত করার কথা। সেখানে আমাকে না জানিয়ে আমার অনুপস্থিতিতে ৪৪ মেট্রিকটন চাল বিতরণ হয়েছে। যা অনিয়ম।
অভিযুক্ত কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু জানান আমি ১৪৬৬ বস্তা চাল পেয়েছি যা ১৪৬৬ জনকেই বিতরণ করা হয়েছে। ৫৫০ জনের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ১৪৬৬ জনকে বিতরণের নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।