প্রতি বছর শীতেই কি আসবে করোনা ভাইরাস?
ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতোই কি করোনা ভাইরাসও এখন থেকে প্রতি বছর আসবে? বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এর সংক্রমণ ঘটাবে? তেমন আশঙ্কাই করছেন মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ-এর গবেষক-বিজ্ঞানীরা।
তাঁদের মতে, অবিলম্বে এর টিকা এবং চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার না হলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল।
আপাতত আমেরিকা ও চিনে দু’টি ওষুধ মানবদেহে প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও তা চূড়ান্ত হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। ফলে আগামী বছর শীতে আবারো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক আকার ধারণ করার আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি আমেরিকার সরকারি ভাবে সংক্রামক রোগের গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া অ্যান্টনি ফাউচি। তাই তার আগেই করোনার চিকিৎসা ও টিকা চূড়ান্ত করার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৪ মার্চ) ফাউচি জানিয়েছেন, গবেষণায় উঠে এসেছে মূলত শীতের সময়েই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, আমরা যেটা দেখছি আফ্রিকার দক্ষিণ অংশে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলিতে শীতের সময়েই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এটার ভিত্তি যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে আগামী শীতের আগে আমাদের প্রস্তুত থাকতেই হবে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, ‘এই কারণেই আমরা একটা ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছি। দ্রুত পরীক্ষা করে সেটাকে যাতে আগামী শীতের আগেই চূড়ান্ত করে ফেলা যায়, তার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
কয়েকদিন আগে থেকেই আমেরিকায় করোনার প্রতিষেধক টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে মানবদেহে। তারও আগে থেকে একই প্রক্রিয়া চলছে চিনে। ফাউচি বলেন, বর্তমানে দু’টি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে। একটি আমেরিকায় এবং একটি চিনে। কিন্তু সেটা চূড়ান্ত হতে এক থেকে দেড় বছর লাগবে।’ মার্কিন গবেষক আরও জানিয়েছেন, চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের তোড়জোড়ও চলছে। অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া ড্রাগ ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সাফল্যও নজরে রয়েছে।
সব মিলিয়ে ফাউচির কথায় স্পষ্ট, আপাতত সংক্রমণ কমিয়ে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেই যে মুক্তি, এমন নয়। প্রস্তুত থাকতে হবে আগামী বছর শীতকালের জন্য। শুধু আশার আলো এটুকুই যে, আগামী বছরও শীতে ছড়িয়ে পড়বেই, এমন কথা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ফাউচি। ছড়িয়ে পড়বে, এই আশঙ্কা করে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন। তার আগে করোনার টিকা পরীক্ষা সফল হোক, সেটাই চাইছেন বিজ্ঞানীরা।