মহান স্বাধীনতা দিবস আজ
২৫ মার্চের মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বাঙালি এই দিন থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ঢাকা ছাড়া সারাদেশে ওড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। আজ মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ৪৯তম জাতীয় দিবস। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মুক্তির মন্ত্রে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার দিন আজ। বেদনাকে প্রতিজ্ঞায় পরিণত করে যুদ্ধের শপথ নেওয়ার দিন আজ। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
যদিও নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাধীনতা দিবসের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ স্বাধীনতা দিবসের সব কার্যক্রম বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে পুরো রাজধানী সেজেছে লাল-সবুজ আলোকসজ্জায়। সরকারি ভবন, পথ-ঘাটের সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো সাজিয়ে তোলা হয়েছে জাতীয় পতাকা ও উজ্জ্বল আলোয়। সারাদেশের মানুষ দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয় পেলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা গণহত্যা শুরু করে। তাদের এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সব রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করা। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা ওয়ারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
তত্কালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি ছিল এরকম—‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাহাই নিয়া রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।’