রিফাত হত্যা কান্ডের মামলা ঢাকায় নিতে মিন্নির আবেদন কাল
বরগুনায় প্রকাশ্যে দিবালোকে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা বরগুনা থেকে ঢাকার দায়রা জজ আদালতে বদলির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে করা আবেদনের ওপর আগামী কাল বুধবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে আদালত এ দিন ধার্য করেন। একেএম আসাদুজ্জামান ও এসএম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। আদালতে মিন্নির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও অ্যাডভোকেট মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান।
নিহতের স্ত্রী ও মামলার আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি গত ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেছেন।
আবেদনে বরগুনার দায়রা জজ আদালত থেকে ঢাকা জেলা দায়রা জজ অথবা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বদলির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বরগুনার আদালতে মামলার বিচার চললে মিন্নির জীবন হুমকির মুখে থাকবে এ কথা উল্লেখ করে মামলাটি বদলির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
গতকাল দুপুরে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন জেড আই খান পান্না। তিনি আদালতে বলেন, বরগুনার আদালতে এই মামলা বিরতিহীনভাবে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে।
এসময় আদালত বলেন, এভাবে সাক্ষ্য নিতে বাধা কোথায়? সাক্ষী আদালতে হাজির হলে তার জবানবন্দি রেকর্ড করতে সুপ্রিম কোর্টের সার্কুলার আছে।
মিন্নির আইনজীবী বলেন, সাক্ষ্য নিতে বাঁধা নেই তবে কেন এত তাড়াহুড়ো? একটি নির্দিষ্ট মামলায় কেন? দেশের সব মামলাই যদি এভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি হতো তাহলেতো কোনো কথাই ছিল না।
জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান বলেন, আবেদনকারী মিন্নি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে বলে শুনেছি। তবে আমার কাছে কোনো রেকর্ড নেই। তাই প্রকৃত অবস্থা জানতে সময় দরকার। এরপর আদালত বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেন।
গতবছর ২৬ জুন সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত রিফাতের পিতা আব্দুল আলিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে মামলা করেন। এই মামলায় নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় গতবছর ১ সেপ্টেম্বর মিন্নিসহ ২৪জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এই মামলায় নিহতের স্ত্রী মিন্নি জামিনে মুক্ত রয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড গতবছর ২ জুলাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। একারণে তাকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়নি।
মিন্নিকে গতবছর ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করলেও হাইকোর্ট গতবছর ২৯ আগস্ট এক রায়ে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি ওইবছরের পহেলা সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই দিনই পুলিশ মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে আপিল বিভাগ জামিন বহাল রাখায় মিন্নি গতবছর ৩ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরইমধ্যে এ মামলায় মিন্নিসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মামলায় বরগুনার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণও শুরু হয়েছে।