পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মেয়ের হাতে মা খুন
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ফিরোজা নাসরিন (৫৬) নামে এক বিধবা বৃদ্ধা মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ভারসাম্যহীন মেয়ে। বুধবার সকাল দশটার দিকে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের উত্তর কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসায় ওই বৃদ্ধা মা নিজ মেয়ে তামান্না জেবীন রুমানা (২৮) এর হাতে এ নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন। রুমানা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো। পুলিশ নিজ বাসা থেকে নিহত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মেয়ে তামান্না জেবীন রুমানাকে পুলিশ আটক করেছে। নিহত বৃদ্ধা ফিরোজা নাসরিন মঠবাড়িয়া পৌর শহরের কলেজ পাড়ার সাবেক অগ্রণী ব্যাংক ব্যবস্থাপক মৃত হেমায়েত উদ্দিন হাওলাদারের স্ত্রী।
থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া পৌরশহরের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা ফিরোজা নাসরিন তার স্বামীর মৃত্যুর পর এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ছেলে রিয়াজ উদ্দিন বিয়ে করে শহরের হাসপাতাল এলাকায় আলাদা বাসা নিয়ে থাকতেন। অপরদিকে মেয়ে তামান্না জেবীনের গত ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে মেয়ে তামান্না জেবীন বিধবা মা এর সাথে থেকে কলেজে লেখা পড়া করে আসছিলো। সম্প্রতি মেয়ে রুমানা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। গত মঙ্গলবার মায়ের সাথে ঝগড়াঝাটি হলে রুমানা বাসার মালামাল ভাংচুর করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ভাই রিয়াজ বাসায় এসে বোনকে শান্ত করেন। বুধবার সকালে ভাই রিয়াজ বাসায় এসে বোনের জন্য ঔষধ কিনতে বাজারে যান। এসময় বাসায় মা ও বোন ছিলেন। সকাল দশটার দিকে বোন রুমানান উত্তেজেতি হয়ে ধারালো বটি দিয়ে মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত বৃদ্ধার ছেলে রিয়াজ উদ্দিন জানান, তিনি বোনের জন্য ঔষধ সাড়ে দশটার দিকে বাসায় এসে কারও কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে দরোজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে বোনকে বিছানায় নিস্তেজ পড়ে থাকতে দেখি এবং রান্না ঘরে বৃদ্ধা মায়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখি।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুজ্জামান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক রুমানাকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে বোন রুমানাকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।